তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের আঙুল শুভেন্দু ও বিজেপির দিকে ঘোরালেন অভিষেক

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এই প্রথমবার চাকরি নিয়ে দুর্নীতির ইস্যুতে সিপিএমের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এই প্রথমবার চাকরি নিয়ে দুর্নীতির ইস্যুতে সিপিএমের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Suvendu and Abhishek

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে আগামীকালই দলীয় প্রতিনিধিদের বার্তা দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রতিনিধির সামনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুর চড়াবেন দলনেত্রী। তার আগে তপসিয়ায় পুরোনো কার্যালয়েই নতুন দলীয় ভবন তৈরির ভিতপুজো শেষে রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের ২৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস তথা ২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে অভিষেককে শুনতে হল দুর্নীতি ইস্যুতে সব চোখা প্রশ্ন। আর প্রতিটাতেই নাম না-করে বল শুভেন্দু অধিকারী, অধিকারী পরিবার আর বিজেপির কোর্টে পাঠিয়ে দিলেন অভিষেক।

Advertisment

বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক চলে গেলেন পূর্ব মেদিনীপুরের প্রসঙ্গে। তাঁর বক্তব্য, 'বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে সেটা ২০১৮ ও তার আগের তালিকার। অভিযোগের ৪০ শতাংশই পূর্ব মেদিনীপুরের। সেই সময় পূর্ব মেদিনীপুর দেখত কে? কোন পরিবার?' কাঁথির সভায় যেভাবে নানা ইস্যুতে দুর্নীতির দায় নাম না-করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দিকে ঘুরিয়েছিলেন। সেই অভিযোগের আঙুল ঘোরানোর খেলায় রবিবার অভিষেক যেন দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমেছিলেন।

দুর্নীতি ইস্যুতে অভিষেকের সাফাই, 'তৃণমূল কংগ্রেস তার কোনও নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেলে ব্যবস্থা নেয়। আর, বিজেপি অভিযুক্তদের বড় পদ দেয়।' বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে তাঁর পিসির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের পিঠ চাপড়ে অভিষেকের সাফাই, 'রাজ্য সরকার যেভাবে অঙ্গনওয়াড়ি আর আশা কর্মীদের দিয়ে দুর্নীতির প্রতিটি অভিযোগ দ্রুততার সঙ্গে খতিয়ে দেখেছে, তাকে তারিফ করতে হয়।'

Advertisment

অভিষেককে শুনতে হল, চাকরি ইস্যুতে দুর্নীতির প্রসঙ্গও। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এই প্রথমবার চাকরি নিয়ে দুর্নীতির ইস্যুতে সিপিএমের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন। অভিষেকের অভিযোগ, 'সিপিএমের কিছু আইনজীবী আছে। আমি বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলব না। কিন্তু, অনেকে একটা দুটো কথা বলে গণমাধ্যমে খবরের শিরোনামে থাকতে চাইছেন। সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। চাকরিপ্রার্থীদের বিভ্রান্ত করছেন।'

চাকরি ইস্যুতে দল এবং তাঁর ঘাড় থেকে যাবতীয় দায় ঝেড়ে ফেলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সাফাই, 'চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে মিটিং করেছি। রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসও চায় সকলের চাকরি হোক। গত একবছরে সরকার ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে। কিন্তু, সবটাই এক আইনি জটিলতার মধ্যে রয়েছে। এসএসসি চেয়ারম্যান থেকে শিক্ষামন্ত্রী যা বলার বলেছেন। দলের তরফে আমার সামর্থ্য, এক্তিয়ার অনুযায়ী যেখানে যা করার করেছি।'

আরও পড়ুন- ইতিহাস উধাও! কেন্দ্রের পাহারায় থাকা ৫০টি মনুমেন্টের খোঁজ মিলছে না

এর মধ্যেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে বিজেপি। জানুয়ারিতেই রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। জোড়া সভা করবেন তিনি। আসছেন মোদীও। এসব শুনে অভিষেকের মুখে শোনা গেল সেই পুরোনো 'বহিরাগত' অভিযোগ। মোদী-শাহদের নাম না-করেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগ, 'ভোট এলেই বাংলার কথা মনে পড়ে।'

বিরোধী বিজেপি নেতাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, সঠিক ভাবে পঞ্চায়েত ভোট হলে তৃণমূল কংগ্রেস হেরে যাবে। এই ইস্যুতেও কার্যত বাপি বাড়ি যা ভঙ্গীতে বিজেপির অভিযোগ বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিলেন অভিষেক। তাঁর জবাব, '২০১১-য় তৃণমূল কংগ্রেস ১৮৪টি আসন পেয়েছিল। ২০১৬-য় পেয়েছিল ২১১ আসন। ২০২১ সালে ২১৪টি আসনে জিতেছে। দিন গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি মানুষের জনসমর্থন বেড়েছে।' অভিষেকের সোজা কথা, বিধানসভা নির্বাচনে তো কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে রাজ্য ভরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানো যায়নি। কারণ, মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে আছে।

Suvendu Adhikari abhishek banerjee tmc