প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরনগরে সভা করার কয়েকদিনের মধ্যেই খুন হলেন নদিয়া জেলার মতুয়া সংগঠনের মুখ তথা কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। গোটা ব্যাপারটা পূর্ব পরিকল্পিত, সত্যজিতের বাড়িতে থেকে বেরিয়ে সোমবার দুপুরে এই মন্তব্য করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সত্যজিৎ বিশ্বাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। নিহত বিধায়কের স্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল বিধায়কের হত্যা প্রসঙ্গে এদিন রীতিমতো আক্রমণাত্মক দেখিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই তৃণমূল সাংসদ বলেন, "অনেকেই দিল্লির নেতাদের পাজামা ধরে ঝুলছেন। আর ভাবছেন খুনে মদত দিয়ে পার পেয়ে যাবেন। কিন্তু, এমনটা হবে না। মনে রাখবেন, রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুতেই এমন হবে না"। তৃণমূল যুবকংগ্রেসের সভাপতি জানান, দলের তরফ থেকে তিনি এই বিষয়টির দায়িত্বে। ফলে, যারা সত্যজিৎ বিশ্বাসের হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের প্রত্যেককে 'ঘাড় ধরে টেনে' নিয়ে আসা হবে।
তৃণমূল বিধায়কের হত্যাকাণ্ডে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের নানা 'উস্কানিমূলক মন্তব্যে'র প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করেন অভিষেক। এরপরই তিনি বলেন, দিলীপবাবুদের সঙ্গে বেশ কিছু 'নতুন লোক' জুটেছে। কিন্তু, 'দিল্লির নেতাদের পাজামা ধরে ঝুলে কোনও লাভ হবে না', মন্তব্য তৃণমূল যুবকংগ্রেস সভাপতির।
তরুণ বিধায়ক তথা নদিয়া জেলা তৃণমূল যুবকংগ্রেসের সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাসের মৃত্যুতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানান অভিষেক। এই মুহূর্তে সত্যজিতের কোনও পরিবর্ত তাঁদের হাতে নেই বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। কিন্তু, সত্যজিৎ বিশ্বাসকে হত্যা করে তৃণমূলকে দমানো যাবে না বলে হুঙ্কার ছাড়েন অভিষেক। তিনি বলেন, এবার "হাসখালি ব্লকের ঘর ঘর থেকে সত্যজিৎ জন্মাবে"। এদিন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তিনি সত্যজিৎ বিশ্বাসের বাড়িতে এসেছেন বলে জানান ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ।
উল্লেখ্য, শনিবারের ভর সন্ধ্যাবেলা অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক থেকে ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন সুজিত মন্ডল এবং কার্তিক মণ্ডল নামের দুই ব্যক্তি। কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে সাসপেন্ড করা হয়েছে হাঁসখালি থানার ওসি অনিন্দ্য বসু এবং সত্যজিৎ বিশ্বাসের দেহরক্ষীকে। এই খুনের ঘটনায় মুকুল রায়-সহ চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।