তৃণমূলের বৃদ্ধতন্ত্র নিয়ে আগেই সবর হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়েছিলেন প্রবল সমালোচনার মুখে। সোমবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্যে লোকসভা ভোটের আগে ফের সেই বিতর্ক নতুন করে মাথাচাড়া দিল।
আবারও দল ও রাজনীতিতে তারুণ্যের পক্ষে সওয়াল করলেন জোড়-ফুলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড।' তবে দলে বৃদ্ধতন্ত্র নিয়ে তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও বিরোধ নেই বলেও দাবি করেছেন। এ দিন দমদম বিমানবন্দরে অভিষেক বলেছেন, 'দিদির সঙ্গে কোনও মতান্তর নেই।' গত মাসের শেষে নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বিশেষ অধিবেশনে ছিলেন না অভিষেক। সুপ্রিমোর সঙ্গে মতভেদের কারণেই তাঁর ওই পদক্ষেপ ছিল বলে গুঞ্জন ওঠে দলের অন্দরে। যা নিয়ে অভিষেক বলেছেন, 'আমি নেই কে বলছে, আমি তো আছি। শুধু একটা সভাতে ছিলাম না। সেখানে আমার ছবি না থাকায় কোনও সমস্যা নেই, দলনেত্রীর ছবি তো ছিল।'
আরও পড়ুন- ধরাশায়ী কংগ্রেস, কী ভবিষ্যৎ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের? মুখ খুললেন অভিষেক
তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যায় দলে বৃদ্ধতন্ত্র নিয়ে মমতা-অভিষেক মতপার্থক্য রয়েছে। সেই জল্পনাই এ দিন আরও উস্কে দিয়েছেন শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেছেন, 'আমি মনে করি সব পেশায়, সর্বত্র যেমন একটা বয়সের উর্ধ্বসীমা থাকে, তেমনই রাজনৈতিক দলেও থাকা উচিত। কারণ, বয়স বাড়লে মানুষের প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়। তিরিশ চল্লিশ বছর বয়সে একটা মানুষ যতটা দৌড়ে কাজ করতে পারেন, সত্তর বছরে পৌঁছে তা করা যায় না।'
আরও পড়ুন- বুক চিতিয়ে পাশে ছিলেন অধীর! তবে অভিষেকের অবস্থানে মহুয়া কি সত্যিই চাপে?
দলে প্রবীণদের সাংসদ, বিধায়ক বা জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগ্রহ নিয়ে আগেই সরব হতে দেখা গিয়েছিল কুণাল ঘোষকে। তিনি অভিষেক ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। বলেছিলেন, 'আমিই আমৃত্যু সাংসদ বা বিধায়ক থেকে যাব, আর কিছু কর্মী রয়েছেন যাঁরা সারাজীবন ধরে আমার জন্য দেওয়াল লিখে যাবে। দেহত্যাগ না করলে পদত্যাগ নয়, এ কেমন কথা?' এ দিন অভিষেক কুণাল ঘোষের মন্তব্যকে 'ব্যক্তিগত' বললেও কার্যত তাঁর দাবিতেই সিলমোহর দিলেন।
নেতাজি ইন্ডোরের সভায় দলের প্রবীণদের কাজ করে যেতে ইন্ধন জুগিয়ে ছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর দমদমের সাংসদ বলেছিলেন, 'তৃণমূলে বয়সের কোনও সীমা নেই। অভিষেক দু-একবার বলেছিলেন, তবে সেটা জোরালো নয়। পার্টিতে মমতাই শেষ কথা, আর কেউ নন।' এরপরও সেই বৃদ্ধতন্ত্র নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল 'সেকেন্ড ইন কমান্ড'-এর মন্তব্য আদতে সৌগত রায় সহ দলের প্রবীণ জনপ্রতিনিধিদেরই বার্তা।