কাঁথি থেকে শুরু। গত ৩ ডিসেম্বর কাঁথির সভা থেকে মারিশদার এক পঞ্চায়েত প্রধানকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। শনিবার রানাঘাটের সভায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। এদিন তাতলা-১ গ্রামপঞ্চায়েতের প্রাধনকে আগামী সোমবারের মধ্যে তাঁর কাছে ইস্তফাপত্র পাঠাতে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের শীর্ষ নেতার কাছে 'সঠিক তথ্য' পৌঁছায়নি বলে দাবি অপসারত পঞ্চায়েত প্রধান পার্থপ্রতিম দের। তবে দলীয় নির্দেশ তিনি মেনে শনিবারই তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, চাকদার কাছে ধনিচার মহানালা গ্রামে প্রায় চার বছর পঞ্চায়েত প্রধানের দেখা মেলে না। দিন চারেক আগে তাঁর কাছে এই অভিযোগ আসে। এরপরই অভিযোগের খোঁজ-খবর নিয়েছেন তিনি। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের পর এদিন মঞ্চ থেকে তাতলা ১ নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান পার্থপ্রতিম দে-কে ইস্তফার নির্দেশ দেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।
এদিন মঞ্চে অভিষেক বলেন, 'তাতলা-১ গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান আছেন এখানে? আমি প্রধানকে জিজ্ঞাসা করব এই গ্রামে আপনি শেষ কবে গিয়েছিলেন? এই যে ধনিচা পাড়া তাতলা-১ পঞ্চায়েত এখানে বেশ কিছু তফশিলি জাতিভুক্ত পরিবার থাকে। তাঁরা একটা অভিযোগ আমার কাছে পাঠিয়েছিল। আমি চারজনের একটা দলকে পাঠিয়েছিলাম তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে। প্রধানের দেখা নেই, চার বছর হয়ে গেল। তিনি প্রধান থাকবেন কেন? সোমবারের মধ্য়ে ইস্তফা পাঠাবেন। প্রধানের নাম পার্থপ্রতিম দে। পার্থবাবু আপনি যদি আমার কথা শুনতে পান, কান শুনে খুলে রাখুন, মানুষ সার্টিফিকেট দিলে তবে আপনি প্রধান। আর সার্টিফিকেট না দিলে আপনি প্রধান নন। মানুষ সার্টিফিকেট দেননি, মানুষের জন্য আপনি কাজ করেননি। চার বছরে আপনি যদি মহানালা গ্রামে একবারও না যান আপনার প্রধানের চেয়ারে বসার কোনও অধিকার নেই। সোমবার সকালের মধ্যে আমার কাছে আপনার ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেবেন।'
আরও পড়ুন- ক্ষমা চাইলেন অভিষেক, NRC জুজু তুলে মতুয়াদের মুখ না ফেরানোর আবেদন
পঞ্চায়েত প্রধান কাজ না করলে তার দায় ব্লক সভাপতির উপর বর্তাবে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঠিক লোককে জনপ্রতিনিধি করতে প্রার্থীদের নাম সুপারিষে জনগণের কাছে একটি নম্বরও দেন তিনি। এরফলে জনগণের সঙ্গে তাঁর পাঁচিল ভেঙে গেল বলে দাবি করেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
দলীয় নেতার ইস্তফার নির্দেশের পর কী বলছেন তাতলা ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থপ্রতিম দে? পার্থবাবুর দাবি, 'গত সাড়ে চার বছরে মহানালা গ্রামে ২০০বার গিয়েছি। আমার সময়ই প্রথম ওই গ্রামে বাৎসরিক সভা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ ভুল তথ্য দিয়েছেন।' কিন্তু ইস্তফা কি দেবেন তিনি? পার্থপ্রতিম দের জবাব, 'দলের অনুগত সৈনিক হিসাবে আমি ইস্তফা দিয়ে দেব।' সন্ধ্যাতেই তিনি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন বলে খবর। এরপরও কী তৃণমূলে থাকবেন? উত্তরে পার্থ বলেন, ' তাড়িয়ে না দিলে দলের সঙ্গেই থাকব। আমি রাজনীতি করি, ব্যক্তিগত সম্মান-অসম্মান গায়ে মাখলে হবে না।' অভিষেককে কি সঠিক তথ্য দেবেন? পার্থর কথায়, 'দল জিজ্ঞেস করেনি। তাই দলকে সঠিক তথ্য বা বোঝানোর কোনও দরকার নেই।'