সমকামী বিবাহ ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের অবস্থানের উলটো পথে হাঁটতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার দলের সেই অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। 'তৃণমূলের নবজোয়ার' কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ভালোবাসার ধর্ম হয় না। ভালোবাসার সীমানা নেই। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। প্রত্যেকের নিজস্ব জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে বলেই জানান অভিষেক।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিষয়টি বিচারাধীন। ভারত এক গণতান্ত্রিক দেশ। প্রত্যেকের নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। ভালোবাসার কোনও ধর্ম হয় না। ভালোবাসার কোনও সীমানা নেই। তাই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকেরই পছন্দসই জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তা সে জীবনসঙ্গী নারী বা পুরুষ, যে কেউ হতে পারে। এসব বিষয় ঠিক করার কোনও অধিকার আমার নেই। কিন্তু, আমি বিশ্বাস করি যে প্রত্যেক মানুষের ভালোবাসার অধিকার আছে। জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার আছে। তবে, আমি বিশ্বাস করি যে সুপ্রিম কোর্ট গণতন্ত্রকে সঠিক দিশা দেখাবে।'
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট সমকামী বিবাহকে আইনি বৈধতা দেওয়া যায় কি না, সেই ব্যাপারে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিষয়টিকে বিশেষ বিবাহ আইনের আওতায় স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই শুনানিতে অংশ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের তরফে এই মামলায় সওয়াল করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি কেন্দ্রের তরফে বিষয়টি নিয়ে আপত্তির কথা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন। কেন্দ্রের তরফে মেহতা জানিয়েছেন, বিবাহ আইন তৈরি সংসদের এক্তিয়ারভুক্ত। তাছাড়া এই ব্যাপারে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর মতামত জানারও ব্যাপার আছে। কেন্দ্রীয় সরকার সেই মতামত জানার চেষ্টা করছে। যতক্ষণ না মতামত জানা যাচ্ছে, ততক্ষণ যেন সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় আর অগ্রসর না-হয়।
আরও পড়ুন- ‘সিভিল ইউনিয়ন’ কী! বিয়ের থেকে তা কতটা আলাদা?
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সমকামিতাকে অপরাধের তকমা থেকে মুক্তি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে, এখনও পর্যন্ত সমকামী বিয়ে নিয়ে দেশে কোনও আইন তৈরি হয়নি। তার মধ্যেই ২০২১-এর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠান করে বিয়ে করেছেন সুপ্রিয় চক্রবর্তী ও অভয় ডাং। এখন বিশেষ বিবাহ আইনে তাঁদের বিবাহের স্বীকৃতি চেয়ে ওই যুগল শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।