রাজ্য বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার ঘরোয়া মিটিংয়ে যোগ দিতে গিয়ে শুক্রবার আক্রান্ত হলেন দক্ষিন ২৪ পরগণা (পশ্চিম) বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ দাস। এবং চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাঁর বক্তব্য, "অভিষেকের নির্দেশ আজ আমাকে খুন করার জন্য হামলা চালানো হয়েছিল। অভিষেকের একমাত্র পথের কাঁটা আমি, তাই পথের কাঁটা সরাতে এক বছর ধরে অভিষেক আমাকে খুন করার পরিকল্পনা করেছে।"
জেলা বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় জেলা সভাপতির গাড়ি, এবং তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। বিজেপি সূত্রের খবর, শুক্রবার ডায়মন্ড হারবারের কপাটহাট মোড়ে গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রাকে কেন্দ্র করে বিজেপির মন্ডল কমিটির মিটিং ছিল স্বস্তিক ভবনে। মিটিংয়ে যোগ দিতে গিয়েছিলেন অভিজিৎবাবু। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে চা খাওয়ার জন্য বের হন তিনি।
আরো পড়ুন: তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা, গুলি; নিহত তিন
এই সময় অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতী লাঠিসোটা নিয়ে গাড়ির উপরে হামলা চালায়, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে অভিজিৎবাবুকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারের ফলে জেলা সভাপতির মাথা ফেটে রক্তপাত হতে থাকে। পাশাপাশি জেলার সহ সভাপতি সুবল কুন্ডুকেও মারধর করা হয় বলে বিজেপির অভিযোগ।
পরে এ বিষয়ে অভিজিৎবাবু বলেন, "অভিষেক এক বছর ধরে আমাকে খুন করার পরিকল্পনা করেছে। আজকে আমাকে খুন করার জন্য আক্রমণ করা হয়, এবং সেটা অভিষেকের নির্দেশে হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "আমাকে যে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে, সে বিষয়ে পুলিশ সুপার, ডিআইজি এবং এডিজি-কে চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম। এবং আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন করেছিলাম, কিন্তু তা এখনও কেউ করেনি।"
পুলিশের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করে তিনি বলেন, "আজকের মিটিং-এর কথা পুলিশ সুপার এবং ডায়মন্ড হারবার থানার ওসি কে বলেছিলাম, এবং হামলার আশঙ্কা করে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছিলাম, কিন্তু ওরা আক্রমণ করার সময় এসপি বা ওসি-কে ফোন করলেও ফোন ধরেনি, এমনকি ডায়মন্ড হারবারে আমার চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারলাম না। পুলিশ বলেছে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। এখন কলকাতায় যাচ্ছি, দেখা যাক কী হয়।"
আরো পড়ুন: আদ্রায় শুটআউটে নিহত তৃণমূল নেতা
খুনের অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ বিষয়ে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি শক্তিপদ মন্ডল বলেন, "ঘটনার মূূলে রয়েছে বিজেপির অন্তর্দলীয় কোন্দল। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই।"
বিজেপির জেলা সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে খুনের অভিযোগ করেছেন, সে বিষয়ে শক্তিপদবাবু বলেন, "অভিষেক ব্যানার্জি সর্বভারতীয় নেতা, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির পরেই আর একজন জনপ্রিয় নেতা। অভিজিৎ দাসের মতন ছোট মাপের নেতা তাঁর বিরুদ্ধে খুুনের অভিযোগ করলে সেটা মস্তিষ্ক বিকৃতির লক্ষণ। ওঁর ডাক্তার দেখানো উচিত।"