আগামী বছরই বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট। ঘর গুছোতে শুরু করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েতের নানাস্তরে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতারা। যার দরুন একুশের ভোটে ব্যাপক সাফল্যের পরও পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের ফলাফল আশাব্যাঞ্জ্যক নাও হতে পারে বলে শঙ্কায় নেতৃত্ব। তাই সময় থাকতেই দলের জেলা নেতৃত্ব, পঞ্চায়েত সদস্যদের সতর্ক করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রুলিং পার্টির নেতাদের আচরণ কেমন হবে তা স্পষ্ট করলেন। কড়া বার্তায় বুঝিয়ে দিলেন আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কারা দেলর টিকট পাবেন না।
ধুপগুড়ি পুর মাঠে মঙ্গলবার দলীয় সভা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই চাঁচাছোলা ভাষায় বক্তব্য রাখেন ঘাস-ফুলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। দলের নেতা, কর্মীদের স্বভাব, ব্যবহার কীরকম হবে তা বলতে গিয়ে তুলে ধরেন তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনচর্যা। বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি এতবড় নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এই বয়সে সব জায়গায় যেতে পারেন তবে দলের অন্য কোনও নেতা এথ কেউকেটা হয়নি যে যাবে না। মনে রাখতে হবে আমরা নেত্রীর আদর্শে দল করি।'
আরও পড়ুন- ‘দিদির ডাকে স্কুলে বুড়ি ছুঁয়েই ধর্মতলায় নয়’, নির্দেশিকা তৃণমূলের শিক্ষক সেলের
গত লোকসভায় উত্তরবঙ্গে একটা আসনও পায়নি তৃণমূল। দলীয় বিশ্লেষণে, দলের ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণকেই দায়ী করা হয়েছিল শাসক দলের তরফে। এবার তাই সতর্ক জোড়া-ফুল শিবির। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অভিষেকের বার্তা, 'মানুষের কাছে পৌঁছান, জোর করে নয়, মাথা নত করে মানুষেক কাছে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করুন।'
এরপরই মঞ্চ থেকে দলীয় জনপ্রতিনিধি, জেলার নেতাদের কড়া হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, 'নির্বাচনে যেসব জায়গায় ভালো ফল সম্ভব হয়নি সেখানে দলের প্রতিনিধি, নেতারা বিরোধী দলের মত আচরণ করুন। ভুলে যান যে আপনারা রুলিং পার্টির লোক। মনে রাখবেন কয়েকজনের মুখ দেখে মানুষ আমাদের গতবার ভোট দেয়নি। কিন্তু মানুষ তৃণমূলকে চায়। ওই গুটিকয়েক নেতাদের চিহ্নিত করেছি। এবার পঞ্চায়েতে একটাও টিকিট পাবেন না। আপনার পকেটে কত অর্থ আছে সেটা নয়, মানুষের হয়ে কাজ করতে গেলে আগে জনগণের থেকেই সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। তারপরই সে তৃণমূলের টিকিট পাবেন। জেলার নেতা হলেই আপনি কেউকেটা হয়ে গেলেন এসব ভুলে যান। সামনে, পিছনে চারটে করে গাড়ির কনভয় নিয়ে এলাকা ঘোরা বন্ধ করুন।পায়ে হেঁটে, সাইকেলে বা বাইকে এলাকায় গিয়ে গিয়ে জনসংযোগ করুন। তবেই মানুষ আপনাকে সমর্থন করবে।'