দলের রাশ কী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছ থেকে ক্রমশ অভিষেকের হাতে চলে যাচ্ছে? এই প্রশ্নে বিস্তর গুঞ্জন তৃণমূলের অন্দরে। জল্পনায় মাত্রা যোগ করেছে, শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নতুন তৃণমূল গড়ার ডাকে। এছাড়াও, অভিষেকের পক্ষে শহর থেকে গ্রামে পোস্টারও পড়েছে। এই বিরোধ উস্কে দিতে প্রায়শই নানা বক্তব্য রাখে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও। এই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে দলের কর্মী সম্মেলনে মুখ খুলেছেন তৃণমূল নেত্রী।
কী বলেছেন মমতা?
সম্মেলনে দলনেত্রীর আগে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্পূর্ণটাই ছিল পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে। এছাড়া সেখানে মমতার প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতার কথা, লড়াকু মানসিকতার কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।
পরে বক্তব্যের শুরুতেই অভিষেকের ভাষণের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ বলেন, 'অভিষেক তো চনমনে, ও তো বলেই। ও তো ডেয়ার-ডেভিল। আমি একটু শুনতে ভালোইবাসি।'
আরও পড়ুন- ‘লেটার হেডে চাকরির সুপারিশ নয়’, বিধায়কদের ‘সাবধান-বাণী’ মমতার
এরপরই নিজের রাজনৈতিক জীবনে সিপিআইএমের বিরুদ্ধে তাঁর কঠিন লড়াইয়ের উদাহরণ তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'রাজনীতি সহজ জিনিস নয়। ৩৪ বছর রাজনীতির ময়দানে লড়াই করেছি। যাঁরা না দেখেছেন তাঁরা বুঝবেন না।'
নিজের লড়াইয়ের কথা বলতে বলতেই তৃণণূলের অন্দরে ভাগাভাগি নিয়ে মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'আজকালকার মিডিয়া শুধু তৃণমূলের গন্ধ পেতে ব্যস্ত। ভালোটা চোখে দেখতে পায় না। সারাক্ষণ কুটুস কুটুস। এর সাথে ওর লাগাচ্ছে, এর সাথে আমার লাগাচ্ছে। শতাব্দীর সঙ্গে কেষ্টকে লাগাচ্ছে, আমার সঙ্গে অভিষেকের লাগাচ্ছে। এরাই বোঝে না যে এটা হওয়ার নয় রে। এতে টিআরপি বাড়বে না।'
আরও পড়ুন- ‘পুত্রসম পরমপ্রিয় অভিষেক’, মমতার সামনেই বললেন কল্যাণ
পাশাপাশি নেত্রীর দাবি, 'তৃণমূল কংগ্রেসে টিকিট পেতে লবি করতে হয় না। যে কাজ করবে তাঁকে দল খুঁজে নেবে।'
মমতার বক্তব্যের আগে অভিষেক বলেছেন, 'এই দলে কোনও লবি নেই, একটাই লবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দিনে ভোট শান্তিপূর্ণ হবে। বিজেপিকে ল্যাজেগোবরে করতে হবে। দলে এক নম্বর, দুই নম্বর বলে কেউ নেই। আমরা আগামী দিনে ভোটে জিতে মমতাকে উপহার দেব।'
কলেবরে বেড়েছে তৃণমূল। শক্তিও আরও বাড়ছে। এই অবস্থায় তৃণমূলের অন্দরের মমতা-অভিষেক ভাগাভাগি নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন দলের কর্মীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের কর্মী-সম্মেলন থেকে সেই বিভ্রান্তি দূর করতে উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তাঁর বক্তব্যেই তা স্পষ্ট।