২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বড়সড় সাফল্যের মুখ দেখল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। একুশের নির্বাচনে খোয়ানো ধূপগুড়িতে বাজিমাত জোড়াফুলের। বিজেপির বড় আশায় জল ঢেলে ছাড়ল তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের এই কেন্দ্রের লড়াইয়ে প্রায় হারিয়েই গেলেন বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী। ধূপগুড়িতে দলের বিরাট জয়ের পরেই টুইটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা লিখেছেন তা এখন জোর চর্চায়। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের মন্তব্য নিয়েও জোরদার আলোচনা।
ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী নির্মল রায়। ৪ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী জোড়াফুলের প্রার্থী। ভোট গণনায় এদিন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ছিল শুরু থেকেই। তবে শেষমেশ বিজেপির থেকে ধূপগুড়ি ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের এই কেন্দ্রটিতে তৃণমূলের সাফল্যের পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে রাজবৈতিক মহলের একাংশ। এখানে ভোটের প্রচারে এসে ধূপগুড়িকে পৃথক মহকুমা হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই প্রতিশ্রুতিই ভোটের লড়াইয়ে বড় ফ্যাক্টর হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন অভিষেক। কী লিখলেন টুইটে?
"ঘৃণা ও ধর্মান্ধতার বদলে উন্নয়নের রাজনীতিকে বেছে নেওয়ার জন্য ধূপগুড়িবাসীকে ধন্যবাদ। জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য প্রত্যেক তৃণমূলকর্মীকে স্যালুট জানাই। আমরা ধূপগুড়ির সর্বাত্মক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টার খামতি রাখব না।"
ধূপগুড়িতে বিজেপিকে দুরমুশ করতে পেরে খুশিতে ডগমগ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও। তিনি কী বললেন?
"প্রত্যাশিতশিতভাবেই এগিয়েছি আমরা। ফাইনালি ৪ হাজার ৩০০ ভোটে জয়ী তৃণমূল। এই জয় একটি দিক নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে।''
আরও পড়ুন- বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে থাবা তৃণমূলের, ধূপগুড়িতে পালা বদল
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যও চর্চায়। তাঁর কথায়….
''মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বিশ্বাস রাখছেন। বাংলায় উন্নয়নই শেষ কথা বলবে। সাপ্রদায়িতকা শেষ কথা বলবে না। ভুল বুঝিয়ে ধূপগুড়িতে জিতেছিল বিজেপি। সেটা সংশোধন করে ধূপগুড়ির মানুষই তৃণমূলকে আপন করে নিলেন। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই থাকবে।''
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রটিতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বামেদের ভীত মজবুত ছিল। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একটানা এই কেন্দ্রে জয় পেয়েছিল বামেরা। তবে ২০১৬-এর ভোটে ঘটে পালাবদল। ধূপগুড়িতে জয়ী হয় তৃণমূল।
তবে একুশের নির্বাচনে কেন্দ্রটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। পরে গেরুয়া দলের জয়ী প্রার্থীর মৃত্যুতে উপ নির্বাচন হয় ধূপগুড়িতে। উপ-নির্বাচনেই বাজিমাত জোড়াফুলের। ধূপগুড়ির হারানো জমি পুনরুদ্ধারে সফল রাজ্যের শাসকদল। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ধূপগুড়ির এই জয় তৃণমূলকে বড়সড় স্বস্তি এনে দেবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।