Lok Sabha Election 2024: 'নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তৃণমূলের কিছু করার ক্ষমতা নেই। ওরা ভুল বুঝিয়ে ভোট চাইছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের যে তদন্তকারী এজেন্সিগুলি রয়েছে তারা তৃণমূলের একটার পর একটাকে ধরছে। অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে। তাহলে ওরা কি করে একটা শ্রেণীর মানুষকে বাঁচাবে।' প্রায় তিন মাস পর মালদায় ফিরে এভাবেই ঘুরিয়ে মোদীর প্রশংসা ও তৃণমূলের সমালোচনা করলেন দক্ষিণ মালদার বিদায়ী কংগ্রেস সাংসদ তথা গনিখান চৌধুরীর ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)।
এবারের লোকসভা ভোটে ডালুবাবু বার্ধক্য জনিত কারণে প্রার্থী হননি। দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারে কংগ্রেস দলের প্রার্থী হয়েছেন ডালুবাবুর একমাত্র ছেলে ঈশা খান চৌধুরী। শনিবার মালদার কোতুয়ালি ভবনে সাংসদ ডালুবাবু ফিরে আসতেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস দলের প্রার্থী মোস্তাক আলম।
এদিন বাড়িতেই সকাল থেকেই দফায় দফায় বাবার সঙ্গে আলোচনা করেছেন ছেলে তথা এবারে দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী। এরপরই ডালুবাবু কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বিশদ ভাবে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করেছেন।
আরও পড়ুন- Darjeeling: জমে গেল পাহাড়ের লড়াই, BJP VS BJP! রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে প্রার্থী পদ্ম বিধায়ক-ই
দক্ষিণ মালদার সাংসদ তথা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) বলেন, 'গতবারের বিধানসভা নির্বাচনে সুজাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিল আমার ছেলে ইশা। সেই সময় এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ছিল তৃণমূল । ফলে আতঙ্কিত সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছিল। পরাজিত হয়েছিল কংগ্রেস। এরপর কেটেছে কয়েকটা বছর। অনেকেই যে ভুল করেছেন, তা এখন স্বীকার করছেন। নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে ভুল বুঝিয়ে আর ভোট নিতে পারবে না তৃণমূল। কারণ, মানুষ সবটাই বুঝে গিয়েছে। একটা সম্প্রদায়ের মানুষ বুঝে গিয়েছে তৃণমূল এই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ফাঁকা আওয়াজ দিচ্ছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অধীনে থাকা বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থাগুলি এরাজ্যের তৃণমূলের একটার পর একটা নেতাকে ধরছে। তাহলেই ভাবুন ওরা সাধারণ মানুষকে কি করে বাঁচাবে। ওদের অবস্থা খুবই খারাপ।'
কংগ্রেস সাংসদ ডালুবাবু এদিন আরও বলেন, 'শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি বেশ কয়েক মাস বাইরে ছিলাম। শরীরটা কিছুটা ঠিক হয়েছে। ছেলে ঈশার প্রচারে আমি নামবো। ওর জন্য মানুষের কাছে ভোট চাইবো। ও যখন সুজাপুরের বিধায়ক ছিল, তখন অনেক কাজই করেছে। কিন্তু নাগরিকত্বের একটা আতঙ্ক মানুষকে ভুল বুঝিয়ে গত বিধানসভা নির্বাচনে ঈশাকে হারিয়েছিল। ছেলের জন্য মানুষকে বলবো ও খুব পরিশ্রমী এবং কর্মঠ। ওকে সহযোগিতা করুন। দক্ষিণ মালদায় কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ কেউ নেই। তবে শুনেছি বিজেপি প্রার্থী হিসেবে একজন ভদ্রমহিলা বাইরে থেকে এসে বড়বড় ভাওতাবাজি দিচ্ছে। তাতে কোন লাভ হবে না। কারণ বিজেপির অনেক সমর্থকেরা আমার সঙ্গে দেখা করেছে। বহিরাগত প্রার্থীকে মানতে চাইছেন না তাঁরা।'
কংগ্রেস সাংসদ ডালুবাবু এদিন কোতোয়ালির বাসভবনে বসে বলেন, 'অনেকেই আমার মধ্যে নাকি দাদা গনিখান চৌধুরীর ছায়া দেখতে পান। সেটা তাঁদের আবেগ। তবে এবারে ছেলেকে দক্ষিণ মালদার দায়িত্ব দিয়েছি। আমার আশা মানুষ ঈশাকে মেনে নেবে। কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে যে ভুলটা হয়েছিল, তাতে অনেক ভোটারেরাই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ঈশা ভালো ছেলে ও কাজের ছেলে। কিছুদিনের মধ্যেই আমি কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরীর জন্য ময়দানে নামব, ওর জন্য ভোট চাইতে গ্রামেগঞ্জে ছুটবো।'