Advertisment

টিকিয়াপাড়া শুনশান, গভীর রাতে বাড়িতে বাড়িতে পুলিশি অভিযানে গ্রেফতার অভিযুক্তরা

পুলিশকে মঙ্গলবার আক্রমণের পর বুধবার টিকিয়াপাড়ার বেলিলিয়াস রোড এলাকা একেবারে শুনশান। রাস্তায় পুলিশ ছাড়া অন্য কারও টিকি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

শুনশান টিকিয়াপাড়া। ছবি- অরিন্দম দত্ত

পুলিশকে মঙ্গলবার আক্রমণের পর বুধবার টিকিয়াপাড়ার বেলিলিয়াস রোড এলাকা একেবারে শুনশান। রাস্তায় পুলিশ ছাড়া অন্য কারও টিকি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। এলাকা পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। কর্ডন দিয়ে অলি-গলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের ঘটনায় ইতিমধ্যে উত্তাল রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। গতকাল বিকেলের ঘটনার পর রাতেই ওই এলাকায় অভিযানে নামে পুলিশ। ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ ও প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজ থেকে দোষীদের সনাক্ত করার কাজ সেরে নিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। শুধু অপেক্ষা ছিল ওপর মহলের নির্দেশের। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ১০ জন। পুরো এলাকা সিল করে দিয়েছে পুলিশ। এখন ওই এলাকায় প্রবেশ ও প্রস্থানের উপর কড়া নজর রাখছে পুলিশ।

Advertisment

ঠিক কী হয়েছিল টিকিয়াপাড়ায়?

স্থানীয়দের বক্তব্য, মঙ্গলবার মহিলারা কেনাকাটা করতে বাজারে বেরিয়েছিলেন। মূলত তাঁদের সঙ্গেই তর্ক বাঁধে টহলরত র‌্যাফের। সেই বচসা থেকেই এই ঘটনা ঘটে। বহু মানুষ ঘটনাস্থলে জড় হয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টিকিয়াপাড়ায় এদিন একসঙ্গে বহু মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। তখন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা লকডাউন কার্যকর করতে সামাজিক দূরত্ব মানতে তাঁদের কাছে আবেদন জানায়। আবেদনে তেমন কাজ না হলে এক পুলিশকর্মী লাঠি উঁচিয়ে একবার তেড়ে যেতেই রে রে করে পাল্টা তাড়া করতে শুরু করে জনতা। এরপরই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছোড়া শুরু হয়। তখন আতঙ্কে পুলিশই প্রাণপনে দৌড়তে থাকে। এরপর প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় পুলিশ। জানা গিয়েছে, পুলিশের একটি জিপও ভাঙচুর করা হয়েছে।

এর আগে খাবার নিয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুরিয়ায় পুলিশ-জনতা খন্ডযুদ্ধ বেঁধেছিল। তবে মঙ্গলবারই প্রথমবার লকডাউনে সামাজিক দূরত্ব কার্যকর করতে গিয়ে পুলিশকে ইট-পাটকেলের মুখে পড়তে হল। শেষমেষ ঘটনাস্থল থেকে পালাতে হয় পুলিশকে। আক্রমণ হয় ফাঁড়িতেও। রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশ জানিয়ে দেয় টিকিয়াপাড়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এরপর সোমবার রাতেই অভিযান শুরু করে হাওড়া সিটি পুলিশ।

আরও পড়ুন-  লকডাউন কার্যকর করার ‘অপরাধে’ হাওড়ায় ‘প্রহৃত পুলিশ’!

জানা যাচ্ছে, রাত সাড়ে দশটা-এগারটা নাগাদ প্রায় ৪০টি পুলিশের গাড়ির কনভয় সারিবদ্ধ ভাবে টিকিয়াপাড়ার বেলিলিয়াস রোডের ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে। আধঘণ্টা ঘটনাস্থলে থেকে পুলিশ বাহিনী বেরিয়ে যায়। তারপর ফের রাত দুটো-আড়াইটে নাগাদ আরও বেশি ফোর্স গিয়ে পৌঁছয় বেলিলিয়াস রোডে। শুর হয় তল্লাশি। অভিযুক্তদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তুলে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগে সিসি টিভি ও অন্য উত্স থেকে প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেন পুলিশ কর্তারা। তাছাড়া ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে যাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের সম্পর্কে তথ্য জেনে নেওয়া হয় এবং ওই রাতেই ১০জনকে আটক করে পুলিশ।

publive-image একেবারে ফাঁকা টিকিয়াপাড়ার বেলিলিয়াস রোড।

উল্লেখ্য, এই এলাকা আগেই কনটেইনমেন্ট এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মঙ্গলবারের ঘটনার পর এদিন কর্ডন করে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। গার্ডরেল দিয়ে অলগলি সমস্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার এলকা একেবারে শুনশান হয়ে গিয়েছে। সিল কর দেওয়া হয়েছে বেলিলিয়াস রোড এলাকা। একদিকে যখন এ রাজ্যে যথার্থভাবে লকডাউন পালন করা হচ্ছে না দাবি করে কেন্দ্র প্রেরিত প্রতিনিধি দল নিয়ে চরমে উঠেছে প্রশাসনিক-রাজনৈতিক বিতর্ক। ঠিক সেই সময় টিকিয়াপাড়ার মঙ্গলবারের ঘটনা প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছে রাজ্যকে। তাই লকডাউনে মধ্যে পুলিশকে আক্রমণের এই প্রথম ঘটনাতেই দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

West Bengal Lockdown
Advertisment