বর্ধমানে বাস থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে কলকাতায় গ্রেফতার বাবা-ছেলে। আদালতের নির্দেশে দু'জনকেই হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের দফায়-দফায় জেরা করে হাতানো টাকা উদ্ধারের চেষ্টায় পুলিশ। অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাকর্মীর ২৩ লক্ষেরও বেশি টাকা হাতিয়ে চম্পট দেয় কলকাতার মেটিয়াবুরুজ এলাকার বাসিন্দা ওই বাবা-ছেলে। যদিও শেষ রক্ষা হল না। তদন্তে নেমে জামালপুর থানার পুলিশ কলকাতার মুদিয়ালি থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ সাবির হোসেন ও মহম্মদ আতিক হোসেন। তাদের বাড়ি কলকাতার মেটিয়াবুরুজ থানার লিদিপাড়ায়। ধৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। চুরির টাকার খোঁজ পেতে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে পুলিশ। ধৃতদের ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছিল পুলিশ। তবে বিচারক ধৃতদের ৬ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশ ধৃত বাবা ও ছেলেকে জেরা করছে। ধৃতদের টি-আই প্যারেডে সামিল করানোর ব্যাপারেও পুলিশ চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- হুড়মুড়িয়ে ভাঙল সরকারি স্কুলের শৌচাগারের ছাদ-পাঁচিল, থেঁতলে নিহত এক ছাত্র
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে বিহারের নবাদা জেলার গোবিন্দপুর থানার সোরহা গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপকুমার যাদব বাড়ি থেকে কলকাতায় যাচ্ছিলেন। তাঁর দাদা রাজেশ কুমার যাদব প্রাক্তন সেনাকর্মী। দু’বছর আগে তিনি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনিই কলকাতায় ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা করেন। সেই মতো ভাইয়ের হাত দিয়ে তিনি ফ্ল্যাট কেনার ২৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পাঠাচ্ছিলেন।
পুরো টাকাটা একটি ব্যাগে ভরে নিয়ে যাচ্ছিলেন প্রদীপ কুমার যাদব নামে ওই ব্যক্তি। ঘটনার দিন অর্থাৎ ৫ নভেম্বর ভোররাতে বাসটি বর্ধমানে পৌঁছোয়। সেখানে বাসের বেশ কিছু যাত্রী নেমে যান। এরপর বাসটি ফের রওনা দেয়। পথে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের জামালপুর থানার জৌগ্রামে একটি হোটেলের সামনে বাসটি থামে। ওই সময়ে টাকার ব্যাগটি সিটে রেখে প্রদীপ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে হোটেলে যান। ঠিক ওই সময়ে বাসে প্রদীপের পাশের সিটে একজন এবং পিছনের সিটে দু’জন বসেছিলেন। তাঁরা অবশ্য বাসেই ছিলেন। কিছুক্ষণ পর প্রদীপ নিজের সিটে ফিরে এসে দেখেন তাঁর ব্যাগ খোলা। তাতে থাকা পুরো টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে।
এরপর আর দেরি না করে বিষয়টি তিনি বাসের কন্ডাক্টর ও অন্যদের জানান। কিন্তু, টাকার কোনও হদিশ মেলেনি। ততক্ষণে অবশ্য তাঁর পিছনের সিটে বসে থাকা ওই সহযাত্রীও উধাও হয়ে গিয়েছে। ওই সহযাত্রী টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাস থেকে নেমে পালিয়েছে ধরে নিয়ে প্রদীপ কুমার যাদব এরপর জামালপুর থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন। তদন্তে নেমে শেষমেশ অভিযুক্তদের খোঁজ পায় পুলিশ।