/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/02/index.jpg)
করোনার পর এবার আতঙ্কের আর এক নাম অ্যাডিনোভাইরাস।
রাজ্যে হুহু করে ছড়াচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। করোনার পর ‘নয়া ত্রাস’কে কেন্দ্র করে নাভিশ্বাস উঠেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। একের পর এক শিশুমৃত্যুর জের, কার্যত দিশেহারা অবস্থা সরকারি হাসপাতালের। উপচে পড়ছে ভিড়। উপসর্গ সেই জ্বর ও শ্বাসকষ্ট। পাশাপাশি উঠেছে ‘রেফারের অভিযোগ’ও। এদিকে আজ বুধবার হাসপাতালের সামগ্রিক পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বিসি রায় হাসপাতালে চাপ কমাতে বেলেঘাটা আইডিতে খোলা হবে ৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ড। অ্যাডিনোভাইরাসকে নিয়ে আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। সূত্রের খবর রাজ্যের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ইতিমধ্যেই হাজার ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। বিধানচন্দ্র রায় ছাড়াও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাজ্য জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যেই এদিন সকাল থেকেই বিসি রায় শিশু হাসপাতালে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মত উপসর্গ নিয়ে অনেক বাবা-মা’ই সকাল থেকে জরুরি বিভাগের সামনে লাইন দিয়েছেন।
বহুক্ষেত্রেই শিশুর পরিবারের তরফে অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের তরফে বেড অমিল এই যুক্তি খাঁড়া করে শিশুদের কেবল ওষুধ দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী রক্তপরীক্ষার জন্য বিসি রায় শিশু হাসপাতালের ‘ব্লাড ব্যাঙ্কের’ বাইরে উদ্বিগ্ন বাবা-মায়ের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে। এদিকে অ্যাডিনোভাইরাসের আতঙ্কে জেলা শহর থেকে কলকাতা জুড়ে উপসর্গে ভোগা শিশুদের নিয়ে বাবা-মায়েরা ভিড় করছেন বিসি রায় শিশু হাসপাতালে। উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে রীতিমত নাজেহাল খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। বহু ক্ষেত্রেই সামনে এসেছে আবার সেই ‘রেফারের’ অভিযোগ।
শহরের একাধিক নামী সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে সেই জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় চিকিৎসায় আসা শিশু ও পরিবারদের ‘মৌখিক ভাবেও’ রেফার করা হচ্ছে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে, এমন অভিযোগও সামনে এসেছে। ফলে জেলাশহর ও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা করতে আসা একটা বড় অংশের রোগী ভিড় জমাচ্ছেন বিসি রায় শিশু হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গতকাল রাত থেকেই এমন ‘মৌখিক ভাবে’ রেফার করা শিশুর ভিড় সামাল দিতে কার্যত দিশেহারা অবস্থা হয় হাসপাতালের। বেড না থাকায় ফিরতে হয়েছে অনেক শিশুকে অভিযোগ শিশুর পরিবারের। একদিকে অ্যাডিনো ভাইরাসের কোপ, হাসপাতালে হাসপাতালে বেডের অভাব সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যেন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এদিকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বিসি রায় হাসপাতালে (B C Roy Hospital) চাপ কমাতে বেলেঘাটা আইডিতে খোলা হবে ৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ড।
বিসি রায় হাসপাতালের (B C Roy Hospital) শীর্ষ অধিকর্তা জানিয়েছেন, ‘এই হাসপাতালের ওপর প্রচণ্ড চাপ বাড়ছে। চিকিৎসকরা পরিষেবা দিতে প্রাণপাত করছেন। জেলা শহর এবং কলকাতার একাধিক হাসপাতাল থেকে রেফার করা হচ্ছে শিশুদের আমাদের হাসপাতালে। হাওড়া, হুগলি ও নদিয়া থেকে বেশি শিশুকে এই হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে খুব শীঘ্রই আরও অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করা হবে বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর।