টানা জ্বর, সর্দি কাশিতে ভুগছেন? ভাবছেন ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত আপনি? বা ভাবছেন আবহাওয়া বদলের কারণে এই অসুস্থতা? না, অ্যাডিনো ভাইরাসের নজর পড়েছে আপনার ওপর। আপনি এই ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করে নিতে পারলেও, আপনার শিশুর পক্ষে তা সম্ভব নয়। সূত্রের খবর, কলকাতা শহরে একের পর এক শিশু আক্রান্ত হচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাসে। শহরজুড়ে কপালে আশঙ্কা এবং চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসকদের।
অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ কী?
কয়েকদিন আগেও অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে চলত লাগাতার জ্বর, সর্দি, কাশি। ঠান্ডা লাগার মত লাল হয়ে ফুলে উঠত চোখ, সঙ্গে থাকত গলা ব্যাথা। বর্তমানে এই ধরনের উপসর্গের সঙ্গে সংযোজিত হয়েছে শ্বাস কষ্ট ও নিউমোনিয়া। কারোর আবার ডায়েরিয়া দেখা দিচ্ছে। এরপর মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় পৌঁছলে, অ্যাডিনো ভাইরাসের কোপ পড়ছে ফুসফুসে। যেখান থেকে ঘটছে মৃত্যু। ডাক্তাররা উদ্বেগের সঙ্গে জনস্বার্থে জানাচ্ছেন, "এমনটা হলে ফেলে রাখবেন না, রাতারাতি পরামর্শ নিন ডাক্তারের।"
অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার জন্য যে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাতে সময় লাগছে প্রায় মাস খানেক। তাতেও রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সূত্রের খবর, গত দু'মাসে রাজ্যে এই ভাইরাসের জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ শিশু এবং বয়স্করাই এই রোগে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন৷ এমনটাই জানাচ্ছেন কলকাতার ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের চিকিৎসক প্রভাস প্রতিম গিরি। প্রাথমিক অবস্থায় এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, যাদের গলা ও চোখ লাল, তাদের ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে। যেসব শিশুর বয়স ২ বছরের নিচে, তাদের ক্ষেত্রেই সমস্যাটি উদ্বেগজনক বেশি।
মূলত, পরীক্ষা করেই জানা যাবে অ্যাডিনো ভাইরাসের খোঁজ। প্রথমেই পিসিআর (পলিমারেন স্টেন রিয়াকশন্) পরীক্ষা করতে হবে। নাকের পিছন দিক থেকে কফ বার করে পিসিআর পরীক্ষায় পাঠানো হয়। কিন্তু যথেষ্ট ব্যয়বহুল এই পরীক্ষা। ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে এর জন্য খরচ হবে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। প্রাইভেট হাসপাতালে করলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এই মূহুর্তে অ্যাডিনো ভাইরাস রোধ করার কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই।
ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৫ থেকে ১৬ জন। যার মধ্যে ছয়জন অত্যন্ত গুরুতর অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি। পাঁচজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভেন্টিলেশনে রয়েছে।