দুই বছর বন্ধ থাকার পর ফের পুন্যার্থীদের জন্য কৌশিকী অমাবস্যায় খোলা থাকছে তারাপীঠ মন্দিরের দরজা। ফলে পুন্যার্থীরা এবার ওই বিশেষ দিনে পুজো দিতে পারবেন মা তারার কাছে। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট মহকুমা শাসকের অফিসের সভাকক্ষে বৈঠকে কিছু বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কৌশিকী অমাবস্যার উৎসবকে প্ল্যাস্টিক মুক্ত করার শপথ নেওয়া হয়েছে।
কথিত আছে মহিষাসুর বধের পর শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন স্বর্গের দেবতারা। শেষে দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। সেই তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী নিজ কোষ থেকে উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত করে এক পরমাসুন্দরী দেবী মূর্তিতে আবির্ভূতা হন। নিজ কোষ শরীর থেকে বের হওয়ার জন্য তিনি হলেন কৌশিকী। কৌশিকীদেবী আবার তারা ও কালীতে রূপান্তরিত হন। আবার শোনা যায় কৌশিকী অমাবস্যার দিন তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশীমূল বৃক্ষের তলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ফলে ওই দিন মা তারার পুজো দিলে এবং দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয় এবং কুম্ভস্নান করা হয়। এই বিশ্বাসেই দূরদূরান্তের মানুষ ওই বিশেষ দিনে তারাপীঠে ছুটে আসেন।
গত দু'বছর কোভিড আবহে কৌশিকী আমাবস্যায় মন্দিরের দরজা বন্ধ ছিল। এবার খুলে যাচ্ছে সেই দরজা। দুই বছর বন্ধ থাকার কারণে এবার বিশেষ দিনে পুন্যার্থীদের সংখ্যা যে বাড়বে তা আন্দাজ করে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, “আমরা ধরে নিয়েছি এবার পাঁচ লক্ষ মানুষের সমাগম হবে। ওই বিশেষ দু'দিন যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য সমস্ত স্তরের মানুষকে ডেকে বৈঠক করা হয়েছে। আমরা চাই মানুষ নিশ্চিন্তে পুজো দিয়ে মনস্কামনা পূরণ করে বাড়ি ফিরে যাক। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য ওই দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দমকল পরিষেবা থাকছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে স্নানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। নদীতে বোট রাখা হবে। সর্বক্ষণের জন্য থাকবে ডুবুরি। যাতে কোন পুন্যার্থী স্নান করতে নেমে তলিয়ে না যান।”
জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি বলেন, “মদ খেয়ে অসভ্যতাম করলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তার জন্য একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হবে। এছাড়া গোটা তারাপীঠে শতাধিক সিসিটিভি লাগানো হবে। থাকছে ড্রোন। সমস্ত রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ প্রস্তুত।”