শুক্রবার বেহালার মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসল লালবাজার। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শহরের চালু হল নয়া বিধি। সকাল ৮টা বদলে এখন থেকে ভোর ৬টার পর কলকাতায় আর ট্রাক ঢুকবে না। পাশাপাশি, কলকাতার সরকারি এবং বেসরকারি সব স্কুলের বাইরে যান নিয়ন্ত্রণ ও ভিড় সামল দেওয়ার দায়িত্ব সামলাবে পুলিশ। যান নিয়ন্ত্রণের তদারকিতে থাকবেন একজন ওসি কিংবা সম-মর্যাদার পুলিশ অফিসার। শনিবার থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার ।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের নয়া বিধিতে কী বলা হয়েছে?
এখন থেকে সকাল ৮’টার বদলে ভোর ৬'টা থেকে কলকাতা শহরে নিষিদ্ধ হল ট্রাক, লরির প্রবেশ। সরকারি বা বেসরকারি স্কুল ভেদে নয়, এখন সব স্কুলের সামনে স্কুল আওয়ারে ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসার থাকবেন। কোনও জায়গায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সবার আগে দেহ তুলতে হবে পুলিশকে। এর ফলে নজরদারির সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ভালো হবে ও সুরক্ষা নিশ্চিৎ করা যাবে বলে মনে করছে কলকাতা পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাউথ ওয়েস্ট) সৌম্য রায় বলেছেন, 'শুক্রবারে ঘটনার পর মানুষের নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমরা জোর দিচ্ছি। ট্রাফিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কোথাও কোনও ত্রুটি রয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।' তবে, এই পুলিশি 'তৎপরতা' কতদিন বজায় থাকবে তা নিয়ে সংশয়ী অভিভাবক এবং বেহালার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
শুক্রবার ভোরে বেপরোয়া লরি পিষে দিয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকারকে। যা নিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশকে দায়ী করে বিক্ষোভ চলে। তারপর পুলিশের গাড়ি, বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে মারধরও। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পাল্টা লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। এরপর শনিবার সকাল থেকে ভোলবদলে গিয়েছে বেহালা চৌরাস্তার যান নিয়ন্ত্রণের। রাস্তার প্রত্যেক জায়গায় পুলিশ প্রহরা রয়েছে। রাস্তার পেরোনোর জন্য যেসব জায়গা সেখানে একাধিক ড্রপগেট বসানো হয়েছে। বাকি অংশে ব্যারিকেড দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাস বা অটোয় ওঠার জন্য নির্ধারিত জায়গায় দাঁড়াতে বলা হচ্ছে যাত্রীদের। ঘটনাস্থলে তদারকি করতে দেখা যায় ডায়মন্ড হারবারের ওসি( ট্রাফিক) অমলেন্দু চক্রবর্তী'কে।