গুজরাতের দুই জেলায় আগত প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত তিন দেশের সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। এতেই উচ্ছ্বসিত বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টিকে তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের একটা অংশ বলে জানিয়েছেন। দাবি করেছেন, 'এক যাত্রায় পৃথক ফল হবে না। গুজরাটের পর পশ্চিমবঙ্গেও সিএএ প্রয়োগ হবে। এতে মতুয়া নমঃশুদ্রদের সুবিধা হবে।'
প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য এ দেশের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু এখনই তা সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হয়নি। বিধি তৈরি না হওয়াতেই সিএএ কার্যকর করা যাচ্ছে না বলে কেন্দ্র আগেই জানিয়েছে। যদিও নাগরিকত্ব ইস্যুতে বলে থাকতে নারাজ মোদী সরকার। তাই বিধানসভা ভোটের মুখে এবার গুজরাট থেকেই চালুর পথে প্রতিবেশী তিন দেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি, খ্রীষ্টান, শিখদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ।
সোমবার মোদী সরকারের বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এ দিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'গোটাটাই সিএএ-র অংশ। রুল তাহলে হয়ে গিয়েছে। সিএএ কার্যকর শুরু হয়ে গেল। এক যাত্রায় পৃথক ফল হবে না। পশ্চিমবঙ্গেও সিএএ কার্যকর হবে। মতুয়া, নমঃশুদ্রদের এতদিন ভিসা বা চাকরির জন্য বলা হত ৭১ সালের আগের নথি দেখাতে। সেই সমস্যা আর হবে না।'
নাগরিকত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ ও শুভেন্দু অধিকারীর সিএএ দাবি নিয়ে সোচ্চার তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। বলেছেন, 'দ্বিচারিতা করছে মোদী সরকার ও শুভেন্দু। গুজরাটের সেতু বিপর্যয় ও কেন্দ্রের নানা দুর্নীতি থেকে মুখ ঘোরাতেই এই ধরণের হাওয়া ছড়াচ্ছে ওঁরা। শুভেন্দুই তো এক সময় সিএএ কার্যকর করতে দেবে না বলে সরব হয়েছিলেন। এবার অন্য কথা বলতে হচ্ছে কারণ ওঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাই বাঁচতে বড় বড় কথা বলছেন।'
প্রতিবাদ করেছে বাম ও কংগ্রেসও। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'শুভেন্দু সিএএ নিয়ে যা বলছেন তার সঙ্গে সংবিধানের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন সিএএ-র বিধি কার্যকর হল না? সিএএ প্রয়োগ এত সোজা নয়। জোর করে সিএএ কার্যকর করতে গেলে ঠেলা বিজেপি বুঝবে।' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, 'গুজরাট ভোট নিয়ে মোদীজিরা চিন্তায় রয়েছেন। তাই ভোটের আগে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করলেন। ভোট এলেই সিএএ, এনআরসি আসে। এতে বিজেপি ও এ রাজ্যে পঞ্চায়েতের আগে দিদির লাভ হবে।'