মন্ত্রী কন্যার বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই করে চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তা টিঁকল না। নম্বর কেলেঙ্কারির জেরে বাতিল হল ববিতার চাকরি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় শুনেই আদালতেই এদিন ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন শিলিগুড়ির মেয়েটি। চোখের জল বাদ না মানলেও
এই চাকরি নিয়ে অতীতে হয়রানি সহ নানা বিষয়ে বলতে থাকেন ববিতা। তবে একেবারে অন্য ছবি ববিতার শহরেরই মেয়ে অনামিকার মুখে। চওড়া হাসি তাঁর।
চাকরি হারিয়ে আদালতে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবার বলেছেন, 'বহু সময় এই চাকরির জন্য আমায় বিভিন্ন চাপের সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু সবের ঊর্ধেব উঠে মহামান্য আদালতের রায়কে গ্রহণ করে আমি চাকরি জোগাড় করেছি। আমি আমার বাড়ি পাশের এলাকাতেও চাকরি চাইনি। যেখানে চাকরি দেওযা হয়েছে সেখানেই করেছি। এরপরও চাকরিটা চলে গেল আমার। এতে আমার ভুল না কমিশনের ভুল জানি না।' তাঁর প্রশ্ন, 'এতবার ভেরিফিকেশন করা হয়েছে তখন আমায় বলা হল না কেন? আজ এক বছর চাকরি করার পর তা কেড়ে নেওয়া মোটেই কাম্য নয়।'
যদিও নম্বর কেলেঙ্কারির বিষয়টি যে ববিতারই তা এদিনও কড়া ভাষায় বুধিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
বিতা সরকারের হারানো চাকরি পাচ্ছেন শিলিগুড়িরই মেয়ে অনামিকা রায়। হাইকোর্টের রায়ের পর রায় পরিবারে এদিন উৎসবের আমেজ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর শেষে চাকরি জুটল। অনামিকা বলছেন, 'আমি কখনও আশাহত হইনি। আমি জানতাম, চাকরিটা আমিই পাব। মেধাতালিকায় আমার নাম এবং ববিতার নাম পর পর ছিল। আমি ২১ নম্বরে ছিলাম। ববিতা ছিল ২০-তে। অঙ্কিতা আসার পর আমাদের র্যাঙ্ক পিছিয়ে যায়। অঙ্কিতার চাকরি বাতিলের পর তা চাকরি ববিতা পেয়েছিল। কিন্তু আমি পরে দেখি, ববিতার আসল নম্বর আমার চেয়ে কম। ও ২ নম্বর কম পেয়েছিল। তাই চাকরিটা আমারই প্রাপ্য। তার পর আমি আদালতে যাই।'
এরপরই চওড়া হাসি নিয়ে অনামিকা বলতে থাকেন, 'একজন চাকরিপ্রার্থীর কাছে চাকরি পাওয়ার চেয়ে ভাল খবর তো আর কিছু হয় না। এটাই হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন। খুব আনন্দ হচ্ছে।'
হাইকোর্টের নির্দেশে, তিন সপ্তাহের মধ্যে চাকরির নিয়োগ পাবেন অনামিকা। বাড়ি থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত স্কুলেই তাঁর চাকরি হবে।