ফের রাজ্যে পুলিশ পেটেনোর অভিযোগ। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের পর ফের মারধর করা হল উর্দিধারীদের। এবার ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদের সালার। পুলিশের এই পরিণতির জেরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশকে উত্তম-মধ্যম দেওয়ার ঘটনার নেপথ্যে বাংলার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
কী বলেছেন মমতা?
মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এগরার বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ সংক্রান্ত বিষয়ে কথার পর ওঠে সালারে পুলিশ পেটানোর ঘটনা। যা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'প্রত্যেকটা মিটিং, মিছিল থেকে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতারা পুলিশকে পেটাতে বলছে। যেগুলোর ক্লিপিং আমাদের কাছে রয়েছে। পুলিশকে এরা প্রতিদিন পেটাতে বলছে। কিন্তু মে রাখতে হবে যে, পুলিশ রক্ষক, পুলিশ না থাকলে আমরাও শান্তিতে থাকতে পারবো না। তাই পুলিশকে যারা পেটাচ্ছে আমি বলব তাদের বিরুদ্ধে স্ট্রং অ্যাকশন নিতে।'
আরও পড়ুন- এগরায় বিস্ফোরণ: CID তদন্তের নির্দেশ দিয়েও NIA-তে আপত্তি নেই মুখ্যমন্ত্রীর
মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, 'একটা কোনও ঘটনা ঘটে গেলে মানুষ বিক্ষোভ করতেই পারেন। তা সঙ্গত বলেও আমি মনে করি। কিন্তু কথায় কথায় পুলিশ পেটানো! পুলিশ কী করবে? সালারের ঘটনা তো দুটো প্রাইভেট অ্যাম্বুলান্সের মধ্যেকার। কে কোনটায় যাবে সেটা তো পেশেন্ট পার্টি ঠিক করবে। শুনেছি ওরা কয়েকজন একটা অ্যাম্বুলান্সের ড্রাইভারকে মারছিল, পুলিশ গিয়ে তো সেক্ষেত্রে বাঁচাবেই। এই ঘটনায় তিন জনকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ হবে।'
কী হয়েছিল সালারে?
মাধাইপুরের বাসিন্দা চাঁদতারা বিবি দীর্ঘ ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা পর তাকে রেফার করে কলকাতার হাসপাতালে। তারপর চাঁদতারা বিবিকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে গেলে দুই অ্যাম্বুলেন্স চালকের বচসা শুরু হয়। অন্যান্য অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা বলেন ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের পরে লাইনে আছে, ফলে পথ আটককে দেয় বাকি অ্যাম্বুলান্স চালকরা। এর থেকে চালকদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। রোগীর পরিবারের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয় জিয়ারুল সেখ, আরিফ সেখ ও সানি সেখ নামের তিন অ্যাম্বুলেন্স চালক। এই সময় রোগী বোঝাই অ্যাম্বুলান্স চালরকেও মারধর চলছিল। পুলিশ তাঁকে বাঁচাতে গেলে উর্দিধারীদের উপরই চড়াও হয় বাকিরা। বহুক্ষণ অ্যাম্বুলেন্সে আটকে থেকে চিকিৎসা না পেয়ে মাঝরাস্তায় মৃত্যু হয় রোগীর। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় সালারে।
গত মাসে কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুন এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কালিয়াগঞ্জ ইস্যুতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার দেহ উদ্ধারের সময়ে পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, কেন সক্রিয় ছিল না পুলিশ? গন্ডগোলের খবর আগাম কেন পেল না গোয়েন্দারা? কেন পুলিশ সক্রিয় ছিল না? কেন ঘটল এমন ঘটনা?