মেয়র হিসেবে শোভন চট্টোপাধ্যায় পদত্যাগ করলে কে চালাবে কলকাতা পুরসভা? এ নিয়ে রীতিমত বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। ফের নতুন মেয়র নির্বাচিত করা পর্যন্ত ডেপুটি বা মেয়র পারিষদরা তাহলে কী করবেন? তাঁদের দায়িত্ব কি হবে? এসব নিয়েই এখন চলছে জোর চর্চা। তবে সরকারিভাবে মেয়র না থাকলে পুর কমিশনার দায়িত্ব নিতে পারেন না বলেও অনেকে মতপ্রকাশ করেছেন। বিশিষ্ট আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, মেয়রের পদত্যাগের পর একেবারে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব মেয়র নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করাই বাঞ্ছনীয়। পুর কাউন্সিলররা সভার মাধ্যমে নতুন মেয়র নির্বাচন করবেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগের কোনও খবর নেই, যদিও সারাদিন তাঁর ইস্তফা নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে।
মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মন্ত্রী পদ থেকে শোভনবাবু পদত্যাগ করেছেন, এবং তাঁকে মেয়রের পদ থেকেও সরতে বলা হয়েছে। মেয়র পদত্যাগ করার পর পুর কমিশনার খলিল আহমেদ পুরসভা পরিচালনা করবেন। এই ঘোষণার পর বুধবার ছিল কলকাতা পুরসভায় ছুটি। তবু এদিন চেয়ারপার্সন মালা রায় ও খলিল আহমেদ পুরসভায় এসেছিলেন।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, "হাউসকে নতুন মেয়র নির্বাচন করতে হবে। পদত্যাগ হওয়া মাত্রই হাউস ডাকা উচিত। এই সময়কালে ডেপুটি মেয়র পুরসভা চালাবেন। কমিশনার চালাবেন, একথা মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারেন না। যাঁরা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা নিজেদের অধিকার জানেন না। সেই কারণেই তা প্রকাশও করতে পারেন না। পদত্যাগের পরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্পোরেশনের সভা ডেকে নতুন মেয়র নির্বাচিত করা উচিত।"
উল্লেখ্য, কলকাতার ডেপুটি মেয়র হলেন ইকবাল আহমেদ, যাঁর নাম এখনও জড়িয়ে রয়েছে নারদা কেলেঙ্কারির সঙ্গে, যাঁকে গত বছর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই ডেকে পাঠালে যান নি তিনি।
আরেক আইনজীবী অরুনাভ ঘোষের মতে, "আসলে মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নিলেও আমলারাই প্রশাসন চালান। সাধারনত প্রশাসনিক বিষয়টা পুর কমিশনারই দেখেন। এখন মেয়র-ইন-কাউন্সিল সহ অন্যরা যৌথভাবে দেখবেন।"
অভিজ্ঞ মহলের মতে, মেয়রের অনুপস্থিতে পুর কমিশনার পুরসভা চালাবেন, এটা কোনও নিয়ম নয়। এটা বলাই যায় না। বর্তমান মেয়র পদত্যাগ করা মাত্রই মেয়র নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতেই হবে। হাউসের মধ্যে নির্বাচন করে ফের মেয়র বেছে নিতে হবে। ডেপুটি মেয়র, মেয়র ইন কাউন্সিলরা তো আছেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রী এবং শহরের প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, "একবার এরকম সমস্যা হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে প্রশাসক কলকাতা পুরসভা চালিয়েছিলেন। প্রশাসক ছিলেন শিবপ্রসাদ সমাদ্দার। আমি তখন রাজ্যের ওই দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলাম।"