আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ 'ধর্মঘটী' জুনিয়র ডাক্তারদের যে মূল দাবি ছিল, তা হলো 'নিরাপত্তা'। সোমবার নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সেই দাবিই তুলে ধরলেন তাঁরা। বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারদের এক প্রতিনিধি সেই ভয়ঙ্কর রাতের ছবি তুলে ধরেন। তারপরই নিরাপত্তা বিষয়ে একাধিক প্রতিশ্রুতি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা-ডাক্তার বৈঠকে কী কী ব্যবস্থার কথা বলা হয়?
১) হাসপাতালে থাকতে হবে বিপদ অ্যালার্ম
২) রাখতে হবে হেল্পলাইন নম্বর
৩) জরুরি বিভাগে দুজনের বেশি লোককে ঢুকতে দেওয়া যাবে না
৪) জরুরি বিভাগে কোলাপসিবল গেট থাকবে
৫) রোগীর শারিরিক অবস্থা রোগীর পরিবারকে জানানোর জন্য থাকবেন জনসংযোগ অফিসার
৬) হাসপাতালে নিরাপত্তার নজরদারিতে থাকবেন নোডাল অফিসার
৭) নিরাপত্তার জন্য মেডিকেয়ার আইন এসওপি
৮) হাসপাতাল চত্বরে থাকবে অভিযোগ কেন্দ্র
৯) প্রতিটি হাসপাতালের সুরক্ষা ও পরিকাঠামো বিষয়ক আইন
মঙ্গলবার বিভিন্ন হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নেতৃত্বে লালবাজারে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় ৷ পুলিশ কমিশনার ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন পুলিশের অন্যান্য শীর্ষকর্তা ও ডেপুটি পুলিশ কমিশনাররা।
কী কী নিরাপত্তা বিষয়ক পদক্ষেপ গ্রহণ করার ব্যবস্থা হয়েছে?
১) হাসপাতালের নিরাপত্তার নজরদারিতে ডিসি কমব্যাট নভেন্দর পাল সিংকে নোডাল অফিসার করা হয়েছে। কলকাতার পাঁচ মেডিক্যাল কলেজে বুধবার নিয়োগ করা হলো একজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার।
২) খোলা হয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিরাপত্তা বিষয়ে কলকাতা পুলিশের হেল্পলাইন। কলকাতার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগীদের যে কোন নিরাপত্তা এবং সুরক্ষাজনিত সমস্যায় যাতে কলকাতা পুলিশ দ্রুত সাহায্য করতে পারে, তার জন্য চালু করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের এই নম্বর, যা সপ্তাহের সাতদিনই চব্বিশ ঘন্টা চালু থাকবে। নম্বরটি হলো ১৮০০ ৩৪৫ ৮২৪৬
৩) হাসপাতালে বাড়ানো হবে সিসিটিভি-র সংখ্যা। যা সরাসরি লিঙ্ক করা থাকবে ডিসি'র অফিসে।
৪) পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। পাশাপাশি বৈঠকে ডিসিদের প্রিন্সিপাল ও হাসপাতালের এমএসভিপিদের সঙ্গে বৈঠক করে নিরাপত্তার পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরুরি বিভাগে যাতে ভিড় না হয় সেদিকেও কড়া নজর দেওয়া হয়েছে।
৫) হাসপাতাল বিষয়ক কোনো ঘটনা ডিসি কমব্যাটকে জানাবেন সংশ্লিষ্ট ওসি।
৬) মেডিক্যাল কলেজে তৈরি করা হবে আউটপোস্ট। প্যানিক বাটন অর্থাৎ বিপদ অ্যালার্ম থাকবে এই আউটপোস্টে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে নীলরতন সরকার হাসপাতালে পৌঁছে গেছেন পরিদর্শনকারী দল। কোথায় কোথায় সিসিটিভি বসাতে হবে তার মানচিত্র বানিয়ে ফেলা হয়েছে। লালবাজার থেকে এসওপি (স্ট্যানডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) জারি করা হলে, তার পরই সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।