রাজ্যে অব্যাহত শুটআউটের ঘটনা। সেই তালিকায় পূর্ব বর্ধমান জেলার নাম বারেবারে জড়িয়ে যাচ্ছে। শক্তিগড়ে কয়লা কারবারি রাজু ঝা-কে শুটআউটের ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই ফের রবিবার ভরসন্ধ্যায় শুটআউটের ঘটনা পূর্ব বর্ধমানেরই কেতুগ্রামে। এদিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুষ্কৃতীদলের ছোড়া একের পর এক গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে খুন হলেন ইটভাটা মালিক মির্জা সাহিদুল ওরফে বটু। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। গুলিবিদ্ধ ওই ইটভাটা মালিককে তাঁর লোকজন উদ্ধার করে বীরভূমের নানুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। কারা কী কারণে ওই ইটভাটা মালিককে গুলি করে খুন করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মির্জা সাহিদুল ওরফে বটুর বাড়ি কেতুগ্রাম থানার রাজুয়া গ্রামে। কেতুগ্রামের রাইখাঁ গ্রামের কাছে বাদশাহি রোডের ঠিক ধারেই রয়েছে বটু মির্জার ইটভাটা। রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি নিজের ইটভাটার কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন। ওই সময় হঠাৎই একদল দুষ্কৃতী তাঁর ওপর হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী, বটু মির্জাকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা প্রথমে এক রাউন্ড গুলি চালায়। প্রাণ বাঁচাতে বটু ছুটে সেখান থেকে পালিয়ে ইটভাটার একটা ঘরে গিয়ে ঢুকে পড়েন। কিন্তু, তাতেও রেহাই মেলেনি। দুষ্কৃতীরা পিছু ধাওয়া করে বটু মির্জাকে ওই ঘর থেকে টেনে বের করে তার শরীর লক্ষ্য করে ৫ থেকে ৬ রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। সেই গুলিতেই মৃত্যু হয় বটু মির্জার।
কেতুগ্রামে ইটভাটা মালিককে শুটআউটের ঘটনার চারমাস আগে অর্থাৎ ১ এপ্রিল ভরসন্ধ্যায় শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে থাকা ল্যাংচার দোকানের সামনে শুটআউটের ঘটনা ঘটেছিল। ওই দিন জনবহুল পথের ধারেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পরপর গুলি চালিয়ে কয়লা কারবারি রাজু ঝা-কে খুন করে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে যায়। দক্ষ পুলিশ অফিসারদের নিয়ে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল খুনিদের নাগাল পেতে তদন্তে নামে। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও বিহারের পাশাপাশি প্রতিবেশী জেলার দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে সিটের তদন্তকারীরা বেশ কিছুদিন বাদে রাজু ঝা খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।
আরও পড়ুন- স্বপ্নদীপের মৃত্যু: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে? বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের কাহিনি বেশ ‘রহস্যময়’
কেতুগ্রামের ইটভাটা মালিককে শুটআউটের ঘটনার পর একই ভাবে নড়েচড়ে বসেছে জেলা পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন স্বয়ং এই খুনের ঘটনা বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই পুলিশ মনে করছে। চার আততায়ী আলাদা মোটরবাইকে চেপে এসে গুলি চালিয়ে ইটভাটা মালিককে খুন করে পালিয়েছে বলেই পুলিশ ইটভাটার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানতে পেরেছে।