সুমন কাঞ্জিলালকে তৃণমূল কংগ্রেসে বরণ করে নিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতেই তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সুমন কাঞ্জিলালের পাশাপাশি তাঁর ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে তৃণমূলের মহাসচিব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। কারণ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই ঘাসফুল শিবিরে সুমন কাঞ্জিলালকে বরণ করে নিয়েছেন।
Advertisment
এর আগে কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে সভা করে রাজ্য বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, পাঁচ মিনিটের জন্য তৃণমূল দরজা খুললেই বিজেপিতে ভাঙন ধরবে। তাঁর সেই হুঁশিয়ারি যে মিথ্যে ছিল না, রবিবার সুমন কাঞ্জিলালের দলবদলে ফের তা প্রমাণিত হল।
রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিজেপি বিধায়কদের দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে। তাই কোনও বিজেপি বিধায়ক দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে গেলে, কার্যত তার দায় অস্বীকার করতে পারেন না শুভেন্দু অধিকারীও। আর, সেই কারণেই ক্ষুব্ধ বিরোধী দলনেতা রবিবার এই দলবদলের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে টুইট করেছেন, 'আপনি কি ভারতীয় সংবিধানের দশম তফসিল (দলত্যাগ বিরোধী আইন) নিয়ে ভয় পাচ্ছেন? সেই কারণেই তৃণমূলের পতাকা তুলে দিচ্ছেন না? কারণ বিধানসভার অভ্যন্তরে, মুকুল রায়ের ক্ষেত্রে যেমন টিএমসি তাঁকে বিজেপি বলে চিহ্নিত করেছে; সুমন কাঞ্জিলালও দাবি করবেন যে তিনি বিজেপির বিধায়ক দলের সদস্য। ভাইপো, আমি আপনাকে সাহস দিচ্ছি, সুমন কাঞ্জিলালকে বিধানসভার ভিতরে স্বীকার করতে বলুন যে তিনি টিএমসিতে যোগ দিয়েছেন এবং বিজেপি ছেড়েছেন। আসুন, স্পিকারকে বলুন।'
Are you scared of the 10th Schedule of the Indian Constitution (anti-defection law) ? Not handing over TMC flag? Because, inside Vidhan Sabha, as in the case of Mukul Roy, TMC Owner labelled him as BJP; Suman Kanjilal would also claim that he belongs to the BJP Legislative Party. pic.twitter.com/TSFUPuJPgb
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 5, 2023
এর পাশাপাশি, সদ্য দলত্যাগী সুমন কাঞ্জিলালকেও একহাত নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, 'সুমন কাঞ্জিলাল কেন আলিপুরদুয়ারবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তার জবাব তাঁকে দিতে হবে। বিজেপি বিধানসভা দল এই ধরনের স্টান্ট দ্বারা প্রভাবিত হয় না। আমি শীঘ্রই আলিপুরদুয়ারে সেই ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি, যাঁরা সুমন কাঞ্জিলালের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। পাশাপাশি, সেখানে রাজ্য বিজেপির কর্মীদের দুর্নীতিগ্রস্ত টিএমসি সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে উৎসাহিত করব। গণতান্ত্রিকভাবে তাঁদের ক্ষমতা থেকে অপসারণ করতে উত্সাহিত করব।'
I would soon be visiting Alipurduar to meet the Voters, who have been duped by Suman Kanjilal & encourage the @BJP4Bengal Karyakartas to make their fight against the Corrupt TMC Govt more intense and unseat them from power democratically.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 5, 2023
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই টুইটের জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'বিজেপির বিধায়ক যখন বিজেপির ওপর, পরিষদীয় দলের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন, তখন সেটা তো ওই অপদার্থ বিরোধী দলনেতারও চরম ব্যর্থতা, লজ্জার। সেটা ঢাকতেই টুইট করেছেন। ওই সব টুইট করার আগে বাড়ি গিয়ে বাবা আর ভাইকে বোঝান দলত্যাগবিরোধী আইনটা কী!'
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী একজন সাংসদ। ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীও সাংসদ। দুজনেই খাতায় কলমে তৃণমূলে রয়েছেন। কিন্তু, তৃণমূলের দাবি, ওই দুই সাংসদ বর্তমানে বিজেপিতে আছেন। তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ রাখেন না। তার মধ্যে শিশির অধিকারীকে প্রকাশ্যে বিজেপির সভাতেও দেখা গিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন তাঁর বাবা ও ভাই। তাঁরা তৃণমূলের কোনও নির্দেশ মানেন না-বলেও অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের।