Air cooler in Govt. School: জ্বালা ধরানো প্রবল গরমে স্কুলে ক্লাস করতে কষ্ট হচ্ছিল পড়ুয়াদের। যা দেখে কষ্ট পাচ্ছিলেন শিক্ষকরাও। শেষে কচিকাঁচাদের কষ্ট দেখে নিজেরাই টাকা দিয়ে স্কুলের হলঘরে এয়ারকুলার লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকরা। সেই মতো কাজও হয়ে যায় চটজলদি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার দিঘিরপাড় বকুলতলা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের এমন উদ্যোগে আপ্লুত অভিভাবকরা। পড়ুয়ারা তো খুশিতে ডগমগ।
পড়ুয়াদের মনের কথা জানতে প্রধান শিক্ষক 'মনের কথা' নামে একটি ড্রপ বক্স রেখেছিলেন স্কুলে। সেখান থেকে চিরকুটে মিলছিল কারও পেনসিল চাই তো কারও পেন। খাতার আবদারও ছিল সেখানে। শিশু মনের সে সব সমস্যাও নিমেষে মিটিয়েছেন শিক্ষকরা।
তবে এবার প্রধান শিক্ষক নিখিল সামন্ত প্রবল গরমের হাত থেকে স্কুলের বাচ্চাদের খানিকটা স্বস্তি দিতে এয়ারকুলার লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। গরমের হাত থেকে বাচ্চাদের স্বস্তি দিতে এয়ারকুলার বসানো হয় হলঘরে। প্রচণ্ড গরমে এয়ারকুলারের ঠান্ডা হাওয়ায় পড়াশোনায় বেশ মন বসছে কচিকাঁচার দলের।
স্কুলের এই পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্যের প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, 'স্কুলগুলিকে গুরত্ব দিয়ে আগামিদিনে কুলারের পাশাপাশি এসি লাগানোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করতে হবে ক্লাসে।"
রায়দিঘির পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানরা এই স্কুলে পড়াশোনা করে। গরমের কথা মাথায় রেখে একটি হলঘরের মধ্যে সমস্ত ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা আলাদা ভাবে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই হলঘরের সমস্ত জানলা এবং দরজা বন্ধ রেখে সবকটি সিলিং ফ্যান চালু রেখে হলঘরে এয়াককুলার চালিয়ে চলছে ক্লাস। অসহ্য গরমে স্কুলে অন্তত স্বস্তিতে পড়ুয়ারা। এয়ারকুলার চালালে বেশ ঠান্ডা হচ্ছে ঘর। ফলে স্কুলে আসতে আর অনীহা নেই পড়ুয়াদের। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিল সামন্ত বলেন, 'প্রচণ্ড গরমের মধ্যে এই কুলার ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে বসানো হয়েছে।"
উল্লেখ্য, রাজ্যজুড়ে কোথাও তাপপ্রবাহ, কোথাও চরম আর্দ্রতার জেরে স্কুলে আসতে পারছে না বহু পড়ুয়া। একই চিত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামে গ্রামে। প্রচণ্ড গরমে স্কুলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় অনেক অভিভাবক তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, "সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার দিঘিরপাড় বকুলতলা প্রাইমারি স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। প্রান্তিক মৎস্যজীবী, খেতমজুর ও শিক্ষকদের নিজস্ব প্রচেষ্টায় এই কুলার বসানো হয়েছে। আমরা চাই ছাত্রছাত্রীরা ভালো ভাবে পড়াশোনা করুক। গরম যেন তাদের পড়ার ক্ষেত্রে বাধা না হয়। এই গরমে তারা যেন সুস্থ থাকতে পারে।"