/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/04/plane-2025-11-04-11-20-14.jpg)
Air India plane crash: আহমেদাবাদের সেই বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাস কুমার রমেশ।
Air India 171 survivor-Vishwash Kumar Ramesh: আহমেদাবাদে লন্ডন-গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান AI 171–এর দুর্ঘটনার পর এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি বিশ্বাস কুমার রমেশ। গত ১২ জুন ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রু এবং মাটিতে থাকা ১৯ জনের মৃত্যু হয়, একমাত্র জীবিত উদ্ধার হন তিনিই।
“আমি একা বেঁচে গেছি, এটা এখনো বিশ্বাস করতে পারি না”
BBC নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বাস বলেন, “আমি একমাত্র বেঁচে আছি—এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা একেবারে অলৌকিক ঘটনা। কিন্তু আমার ভাইকে হারিয়েছি… ও-ই আমার ভরসা ছিল।”
৩০-এর কোঠায় থাকা এই ব্রিটিশ নাগরিক জানান, ছোট ভাই অজয় কুমার রমেশ–কে হারানোর পর তাঁর জীবন থমকে গেছে। “আমি এখন একা থাকি। নিজের ঘরে বসে থাকি। স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি না, ছেলের সঙ্গেও না। কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে না,” বলেন তিনি।
দুর্ঘটনার দিন:
চলতি বছরের ১২ জুন, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি উড্ডয়নের কিছু পরেই নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং শহরের বিজে মেডিকেল কলেজের হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ২৬০ জন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও।
আরও পড়ুন- SIR 2025 শুরু পশ্চিমবঙ্গে! ভোটার তালিকায় কি আপনার নাম আছে? জানুন এক ক্লিকে
দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে বিশ্বাসকেই জীবিত দেখতে পান। ধোঁয়া ও আগুনের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। বিশ্বাস বসেছিলেন ১১A আসনে, আর তাঁর ভাই অজয় ছিলেন ১১J তে।
দিউ-এর জেলে জন্ম, লেস্টারে বসবাস:
বিশ্বাসের পরিবার দিউ-এর মৎস্যজীবী সমাজের সদস্য। তাঁদের বাবা রমেশ কুমার ভুলাইয়া, যিনি এখন লেস্টারে থাকেন। পরিবারে চার ভাইয়ের মধ্যে বিশ্বাস সবচেয়ে বড়। দুর্ঘটনার পর রমেশ কুমার, স্ত্রী দহ্যাবেন ও দুই ছেলে নয়ন ও সানি আহমেদাবাদে উড়ে যান অজয়ের মৃতদেহ শনাক্ত করতে।পরিবারের মূল ব্যবসা মাছ ধরার নৌকা। তারা মৌসুমে ডিউ ফিরে যায় মাছ ধরার জন্য এবং বাকিটা সময় লেস্টারে গার্মেন্টস দোকানে কাজ করেন।
আরও পড়ুন-SIR: কে আপনার বুথের দায়িত্বে? এক মিনিটেই বের করুন BLO ও ERO-র নাম ও নম্বর !
“প্রতিদিনই কষ্টে কেটে যাচ্ছে”
BBC-কে বিশ্বাস বলেন, “প্রতিদিন আমাদের সবার জন্য যন্ত্রণা। আমি হাঁটতেও পারি না এখন, স্ত্রী আমাকে সাহায্য করেন। কাজ করতে পারছি না, গাড়ি চালাতেও না। মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছি।” তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সমাজনেতা সঞ্জীব পটেল বলেন, “এই পরিবার মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক তিন দিক থেকেই চরম সংকটে রয়েছে।”
ক্ষতিপূরণ ও বিতর্ক:
এয়ার ইন্ডিয়া পরিবারটিকে অন্তর্বর্তী ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২১,৫০০ পাউন্ড (প্রায় ২৩ লাখ টাকা) দিয়েছে, যা তাঁরা গ্রহণ করেছেন। তবে তাঁদের পরামর্শদাতাদের মতে, এই অর্থ যথেষ্ট নয়।পরিবারের মুখপাত্র র্যাড সিগার জানান, তাঁরা তিনবার এয়ার ইন্ডিয়াকে বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন, কিন্তু কোনওবারই সাড়া মেলেনি।
তিনি বলেন, “আজ আমাদের এখানে বসে এই সাক্ষাৎকার দিতে হচ্ছে—এটা দুঃখজনক। এই আলোচনায় আসা উচিত ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের।” সিগার যোগ করেন, “আমরা শুধু চাই, এয়ার ইন্ডিয়া আমাদের সঙ্গে বসুক। যাতে একসঙ্গে কাজ করে এই কষ্ট কিছুটা লাঘব করা যায়।”
এয়ার ইন্ডিয়ার প্রতিক্রিয়া:
টাটা গ্রুপ–মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “মি. রমেশ (বিশ্বাস)-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাব আমরা দিয়েছি এবং তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা আশা করছি শীঘ্রই ইতিবাচক সাড়া পাব।” কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের মূল সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শোকপ্রকাশ করেছেন।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us