প্রবল গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে আম-আদমির। কলকাতা ও একাধিক জেলার তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে জারি হয়েছে তাপপ্রবাহের সতর্কতা। এর মাঝে আলিপুর চিড়িয়াখানার পশু- পাখিদের সুস্থ রাখাটাই রীতিমত চ্যালেঞ্জ আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। সর্বক্ষণ চলছে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি। বিশেষ প্রয়োজনে পশু চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। 'ডায়েট চার্টেও' বিশেষ বদল আনা হয়েছে।
প্রবল গরমে দই-লস্যির প্রেমে পড়েছে ‘বাবু'! দুপুরের মেনুতে রাখা হয়েছে টক দই, তরমুজ। জলেই সারাদিন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জলহস্তি। সুর্যের গনগনে তাপে মানুষের পাশাপাশি কাহিল হয়ে পড়েছে চিড়িখানার পশুপাখিরাও। গরমের দাবদাহ থেকে পশুপাখিদের বাঁচাতে আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রতি বছরের মত এবারেও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
গরমের দাবদাহে কাহিল সাধারণ মানুষ। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহে জেরবার শহর সাধারণ মানুষ। গরমের ভ্রূকুটি থেকে বাদ যাচ্ছেনা বন্য পশুপাখিরাও। গরমে এমনিতেই আলিপুর চিড়িয়াখানা কার্যত দর্শক শূন্য। পাশাপাশি প্রবল গরমে কাহিল হয়ে পড়েছে শিম্পাঞ্জি থেকে বাঘ-সিংহ, হাতি, জিরাফ সহ চিড়িখানার পশুপাখিরা। এই গরমে পশুপাখিদের সুস্থ রাখাই যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছে চিড়িখানা কর্তৃপক্ষের। গরমে রীতিমত কাহিল হয়ে পড়েছে তারা। আর তাদেরকে সুস্থ রাখার লক্ষ্যে তৎপরতা বেড়েছে চিড়িয়াখানার কর্মীদেরও। এতোটুকু খামতি রাখতে চাইছে না আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
তীব্র দাবদাহে নাজেহাল দশা শহর থেকে জেলা, সর্বত্র। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি ছুঁয়েছে। এই পর্বে আগামী কয়েক দিন তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে সূর্যের 'আগুনে মেজাজে' অস্বস্তি তুঙ্গে উঠেছে অফিস যাত্রীদের। শহর কলকাতার পরিস্থিতিও মারাত্মক। আজও পরিস্থিতির তেমন বদলের সম্ভাবনা বেশ কম। আজও বেলা বাড়তেইকলকাতা শহরের রাস্তাঘাট কার্যত জনশূন্য।
এই গরমের হাত থেকে বন্যপ্রাণীদের স্বস্তি দিতে ইতিমধ্যেই প্রতিটি খাঁচার সামনেই বসতে চলেছে ‘স্প্রিঙ্কলার’, গরমে আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের খাবারে বেশ কিছু রদবদলও করা হয়েছে। পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে পশু চিকিৎসকদেরও। গরমে সুস্থ থাকতে চিড়িখানার পশুদের দেওয়া হচ্ছে ওআরএস। দেওয়া হচ্ছে খাবারের পাতে টকদই। সেইসঙ্গে খাঁচা ভিজিয়ে দেওয়া ছাড়াও করানো হচ্ছে স্নানও। ভাল্লুক সহ বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণীর খাঁচায় বসানো হয়েছে কুলারও।
এপ্রসঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “প্রবল গরমে পশুপাখিদের সুস্থ রাখতে তাদের স্নানের পাশাপাশি ডায়েটে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। চিড়িখানায় মূল আকর্ষণ শিম্পাঞ্জি 'বাবু'কে দেওয়া হচ্ছে লস্যি, তরমুজ জাতীয় ফল। সেই সঙ্গে গরমে কাহিল হয়ে পড়া পশুপাখিদের জল স্প্রে করে স্নান করানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে গরমে লু লেগে না যায়। বাঘ-সিংহ রাও এখন খাঁচার সংলগ্ন জলে নেমে ঘনঘন গা ভিজিয়ে নিচ্ছে। প্রতিটি খাঁচায় বসানো হয়েছে 'স্প্রিঙ্কলার’,সেই সঙ্গে সিসিটিভি মনিটারিংয়ের মাধ্যমেও তাদের শরীরের ওপরে নজর রাখা হচ্ছে। ভাল্লুক সহ বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণীর খাঁচায় কুলার বসানো হয়েছে'।