Advertisment

'আমার জেলায় আমার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলবে না'

সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্য করেছে, এই অভিযোগে এক যুবককে থানায় ঢুকে বেধড়ক মারধর করলেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক তথা আইএএস অফিসার নিখিল নির্মল ও তাঁর স্ত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তাঁর স্ত্রীর উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্য করেছে, এই অভিযোগে এক যুবককে থানায় ঢুকে বেধড়ক মারধর করলেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক তথা আইএএস অফিসার নিখিল নির্মল ও তাঁর স্ত্রী। রবিবার ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটায়। ফালাকাটা থানার আইসির সামনেই অভিযুক্তকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি অভিযুক্তকে খুনেরও হুমকি দেওয়া হয়।

Advertisment

ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় জেলা জুড়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জেলার প্রশাসনিক কর্তা কিভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেন, তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই নির্মলের এই কাজের নিন্দা করেছেন, যদিও কেউ কেউ জেলাশাসককেই সমর্থন করেছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে অভিযুক্ত যুবক বিনোদ কুমার সরকার জেলাশাসকের স্ত্রী নন্দিনী কৃৃষ্ণনকে একটি ফেসবুক গ্রুপে অ্যাড করেন। অভিযোগ, তারপর থেকে বিনোদ নন্দিনী দেবীকে উদ্দেশ্য করে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে রবিবার সকালেই ফালাকাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার আট ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

এরপরেই থানায় যান জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রী। থানায় ঢুকেই ফালাকাটা থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়ের সামনেই দুজনে বেধড়ক মারধর করেন অভিযুক্তকে। বারবার ক্ষমা চাইলেও কোন লাভ হয়নি। উলটে আরও বেশি করে মারধর করা হয় অভিযুক্তকে। একসময় জেলাশাসকের স্ত্রী এক পুলিশকর্মীকে গাড়ি থেকে লাঠি নিয়ে আসারও নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই পুলিশকর্মী লাঠি আনতে অস্বীকার করেন।

আরো পড়ুন: রোজ ভ্যালি কাণ্ডে মোচড়, উঠে এলো রহস্যময়ী ‘সিএম’-এর নম্বর

সেইসময় জেলাশাসক অভিযুক্তকে বলেন, "আমার জেলাতে আমার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলবে না। তোমায় যদি আট ঘণ্টার মধ্যে থানায় ঢুকিয়ে দিতে পারি, তাহলে তোমায় বাড়িতে গিয়ে মেরেও ফেলতে পারি।" এরপরেই নিজের মোবাইল বের করে অভিযুক্তকে কমেন্ট পড়তে বলেন নন্দিনী দেবী। কিন্তু অভিযুক্ত পড়তে না চাইলে তাকে লাথি মারেন জেলাশাসকের স্ত্রী। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, আইসির সামনেই অভিযুক্তকে মারা হচ্ছে।

গোটা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। একজন জেলাশাসক কী করে আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জেলাশাসক ও পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্যই করতে চাননি প্রশাসনিক কর্তারা। উল্লেখ্য, বিতর্কে যোগ দিয়ে এরপর নন্দিনী দেবীও একটি ফেসবুক পোস্ট করেন, যেখানে তিনি মারধরের ঘটনা স্বীকার করে নিয়ে তার ব্যাখ্যাও করেছেন।

publive-image নন্দিনী দেবীর ফেসবুক পোস্ট

গোটা ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলা পুলিশ। এদিকে বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। সকলেরই একটাই কথা, অভিযুক্ত অপরাধ করলে তার জন্যে আইন আছে। কিন্তু আইনের রক্ষকরাই এভাবে আইন ভাঙলে সাধারণ মানুষের কী হবে?

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নির্মলকে দশদিনের ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

north bengal district news
Advertisment