ফের ডুয়ার্সের বক্সা জঙ্গলে দেখা মিলল ব্ল্যাক প্যান্থারের। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বনদফতরের বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ব্ল্যাক প্যান্থারের দুটি ছবি। এর আগে দিনের আলোয় বক্সা টাইগার রিজার্ভের জয়ন্তী থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে মহাকাল পাহাড়ে দেখা গিয়েছিল এই বিলুপ্তপ্রায় কালো চিতার। আবারও ট্র্যাপ ক্যামেরায় এই বিলুপ্তপ্রায় হিংস্র বন্যপ্রাণের দেখা মেলায় খুশি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনাধিকারিক ও বনকর্মীরা।
বক্সা টাইগার রিজার্ভের জঙ্গলে বাঘের দেখা না মিললেও এবার আবারও নিজেদের অস্বিত্বের প্রমাণ দিল 'মেলানেস্টিক লেপার্ড' বা ব্ল্যাক প্যান্থার। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বনদফতরের বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ব্ল্যাক প্যান্থারের দুটি ছবি। চলতি বছরের শুরুতে পর্যটকদের ক্যামেরায় দিনের আলোতে ধরা পড়েছিল এই কালো চিতার। সেই সময় দুটি কালো চিতার দেখা মিলেছিল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে মহাকাল পাহাড়ে। ফের এই সংরক্ষিত জঙ্গলে দেখা মিলল এই হিংস্র জন্তুর। বন দফতরের দাবি, ওই ছবি থেকেই পরিষ্কার বক্সা পাহাড়ের জনমানবহীন দুর্গম এলাকায় কালো চিতার বসতি রয়েছে।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কালো চিতা আদতে চিতাবাঘই। জিনগত কারণে এদের শরীরে চিতাবাঘের মতো হলদে ছোপের বদলে রয়েছে নিকষ কালো কালো ছোপ। জ্বলজ্বল করে ওঠে গাঢ় হলদে-সোনালি চোখ। গায়ের রঙ কালো হওয়ার দরুন প্রাকৃতিক কারণে দিনের আলোতে এরা কিছুতেই প্রকাশ্যে আসতে চায় না। এরা চিতাবাঘের তুলনায় অনেক বেশি হিংস্র। বন দফতরের দাবি, ওই ছবি থেকেই পরিষ্কার বক্সা পাহাড়ের জনমানবহীন দুর্গম এলাকায় কালো চিতাবাঘদের বসতি রয়েছে।
বন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের পাঁচটি সংরক্ষিত জঙ্গল মহানন্দা অভয়ারণ্য, নেওড়াভ্যালি, গরুমারা, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান এবং বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ব্ল্যাক প্যান্থারের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে বহুবছর পর বনদফতরের পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায় বক্সা জঙ্গলে দেখা মিলল কালো চিতার। এই ঘটনায় উচ্ছ্বসিত বনকর্তারাও। সাধারণত বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দুর্গম এবং জনমানব শূন্য এলাকায় এদের দেখা মিলল। ওই এলাকাতেই বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়মিত ভাবে ক্লাউডেড লেপার্ড ও এশিয়াটিক ব্ল্যাক বিয়ারের দেখা মিলছিল। এবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন ব্ল্যাক প্যান্থার।
আরও পড়ুন কাকভোরে রক্তপাত মালদার গ্রামে! এক পাল শিয়ালের হামলায় ক্ষতবিক্ষত ৩৮
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা প্রবীণ কাশওয়ান বলেন, ২০২০ সাল থেকেই এদের বেশ কয়েকবার দেখা গিয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ওঠা ছবির মাধ্যমে। বর্ষা শেষ হলেই বক্সার সংরক্ষিত এলাকায় বসানো হয় ট্র্যাপ ক্যামেরা। শীতকাতুরে এই অতিথিরা প্রতিবছর নেমে আসে ভুটান লাগোয়া বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে শিকারের লোভে। তবে দিনের বেলায় এদের দেখা পাওয়াটা সত্যিই দুষ্কর। এটা খুবই খুশির খবর। কারণ ব্ল্যাক প্যান্থাররা খুবই বিরল। বক্সার জঙ্গলে নিয়মিত ভাবে তাদের দেখা মিলছে ট্র্যাপ ক্যামেরার মাধ্যমে। এরফলে একটা বিষয় প্রমাণিত হয় যে, অবশ্যই বক্সার জঙ্গল ব্ল্যাক প্যান্থারের জন্য উপযুক্ত ও আদর্শ পরিবেশ। না হলে এই বন্যপ্রাণের দেখা মিলত না ডুয়ার্সের এই সংরক্ষিত জঙ্গলে। বক্সার জঙ্গলে ব্ল্যাক প্যান্থারদের অস্তিত্ব এখানকার জীব বৈচিত্র্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে বিশ্বাস বনদফতরের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন