শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ আধিকারিকদের অনেকেই জেলবন্দি। এই আবহেই ফের শিক্ষাক্ষেত্রে বড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এলো। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষার অন্তর্গত কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে বিস্তর বেনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ। মানা হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্ধারিত নিয়মাবলী। ফলে চরম অনিশ্চয়তায় দূরশিক্ষায় কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ।
ইউজিসি-র নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে দু'বছর আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগে পঠনপাঠনের অনুমোদন বাতিল হয়েছিল। পরে, ২০২২ সালে পূর্ণ সময়ের নতুন ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়। এরপরই ইউজিসি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের দূরশিক্ষা চালুর অনুমোদন দেয়। ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী দূরশিক্ষার প্রতিটা বিভাগে স্থায়ী অন্তত দু'জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর থাকতে হবে। অভিযোগ, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হলেও এখনও কোনও স্থায়ী প্রফেসর নেই।
গত অক্টোবরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগে পড়ুয়া ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয় ফর্ম পূরণের কাজ। বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, ইতিহাস, সংস্কৃত ও কম্পিউটার সায়েন্সে দু'বছরের এই কোর্স চালু হয়। বছরে সাত দিন করে মোট চৌদ্দ দিন ক্লাস করানো হবে। অভিযোগ, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হলেও এখনও কোনও স্থায়ী প্রফেসর নিয়োগ করা হয়নি। এই বিভাগে চুক্তিভিত্তিক যে দু'জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসার ছিলেন তাঁরাও কাজ ছেড়েছেন। সেই আসন ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। যার জেরে ব্যহত হচ্ছে পঠনপাঠন।
অধ্যাপক নেই। সেই সঙ্গেই গোদের উপর বিষফোঁড়া কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে স্টাডি মেটিরিয়ালের অভাব। স্টাডি মেটিরিয়াল এখনও তৈরিই হয়নি। ফলে কোর্সে ভর্তি হওয়া পড়ুয়ারা কী পড়বেন তার কূলকিনারা পাচ্ছে না।
বেনিয়ম নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে একদা কর্মরত অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পার্থ বর্মা বলেন, 'স্থায়ীকরণের জন্য আবেদন জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ তা মানেনি। স্টাডি মেটিয়াল তৈরির জন্য আগে বলা হলেও অজানা কারণে তা তৈরি হয়নি। ফলে সমস্যায় পড়বেন হাজার হাজার পড়ুয়া।'
অভিযোগ প্রসঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা কোর্সের ডিরেক্টর ডঃ স্বপন ভট্টাচার্যকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।
অনিয়মের অভিযোগে একবার ইউজিসি-র অনুমোদন বাতিলের পরও টনক নড়েনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বেনিয়ম জারি থাকলে অতীতের হাল হতে বাধ্য। যার মাশুল গুণতে হবে কয়েক হাজার পড়ুয়াকে।