কাঁথির বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে সম্পত্তিতে বিপুল বৃদ্ধি ও অসঙ্গতির অভিযোগ এনেছিলেন কুণাল ঘোষ। শিশির অধিকারী সম্পর্কে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা। শিশিরবাবুর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যে সাধারণ সম্পাদক। সেই চিঠি প্রাপ্তির কথা জানিয়ে কুণালকে এবার পাল্টা চিঠি দিয়েছেন খোদ অমিত শাহ। সোশাল মিডিয়ায় সেই চিঠি নিজেই পোস্ট করেছেন কুণাল ঘোষ। দাবি করেছেন ' দিল্লি বাধা না দিলে তদন্ত নিশ্চিত।'
সোশাল মিডিয়ায় কুণাল ঘোষ লিখেছেন, 'শিশির অধিকারীর সম্পত্তিতে বিপুল বৃদ্ধি ও অসঙ্গতি রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। অমিত শাহের তরফ থেকে উত্তরে প্রাপ্তি স্বীকার লেখা চিঠি পেয়েছি। সিবিআই সূত্র থেকেও প্রাপ্তি স্বীকারের চিঠি পৌঁছেছে। দিল্লি বাধা না দিলে তদন্ত নিশ্চিত। সারদা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে এর তদন্ত দরকার অবিলম্বে। শিশিরবাবুকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে।'
সংবাদ মাধ্যমে কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'তৃণমূলের সাংসদ হয়ে শিশির অধিকারী সব সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। উনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাও সাংসদ পদ ছাড়েননি। তৃণমূলের তরফে ওনার পদ খারিজের দাবি জানানো হলেও লোকসভার স্পিকার এখনও কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করেননি। ওনার ছেলে তৃণমূলকে চোর বলছেন। শুভেন্দু নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে দেখুন। কে কি তা বুঝতে পারবেন। আমি চাই তদন্ত হোক, তাহলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। সূত্র মারফৎ আমি জানতে পেরেছি সিবিআই-ও আমার দেওয়া চিঠি পেয়েছে।'
আরও পড়ুন- ‘মমতা চোর’, শুভেন্দুর বুকে লেখা দেখেই তেলে-বেগুনে জ্বলছে তৃণমূল, সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ
তাহলে কী লোকসভা ভোটের আগেই বাংলার বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় এজেন্সি? নজর এখন সেদিকেই। এই তদন্ত হলে নিশ্চিৎভাবেই তা হবে বঙ্গ তথা ভারতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অমিত শাহর দেওয়া চিঠির বিষয়টি কুণাল ঘোষ সোশাল মিডিয়ায় পোস্টের পরই মঙ্গলবার শিশির অধিকারী বলেছেন, '১৯৬৮ সাল থেকে আমি আয়কর জমা করছি। তখন কুণালের জন্ম হয়নি।'
আরও পড়ুন- উঠে দাঁড়াতে হবে, দিতে হবে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা, ‘বাংলার মাটি’ গান নিয়ে বড় নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
ঘোষের দাবি অনুযায়ী, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সম্পত্তি ২০০৯ সালের নির্বাচনী হলফনামায় ছিল মাত্র ১০ লক্ষ টাকা। সেখান থেকে মাত্র ৩ বছরে অর্থাৎ ২০১২ সালে শিশিরের সম্পদের পরিমাণই বেড়ে হয়েছে ১০ কোটিরও বেশি। কুণালের প্রশ্ন, 'ঠিক যে সময় সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন অধিকারী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি করে ব্ল্যাকমেইল করে তাঁর থেকে টাকা তোলার অভিযোগ করেছেন, সেই সময়ই শিশির অধিকারীর সম্পত্তি এত বাড়ল কী করে?' এ বিষয়ে ইডি,সিবিআই তদন্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তাদের চিঠি লিখেছিলেন এই তৃণমূল নেতা।