বার বার মুখ খুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন। দলবিরোধী আবার কখনও কুমন্তব্যের জন্য হাইকমান্ডের রোষে পড়েছেন। ফের নিজের মন্তব্যের জন্য শীর্ষ নেতৃত্বের রোষে পড়লেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির সিবিআই সেটিং মন্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। পদ্মনেতৃত্ব এবার চরম অসন্তুষ্ট দিলীপ-উবাচের জেরে। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কী বলেছেন দিলীপ, তার বিস্তারিত রিপোর্ট বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।
বিজেপি সূত্রে খবর, দিলীপের বক্তব্যের ভিডিও-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে চেয়েছেন শাহ-নাড্ডারা। যে ভিডিওতে দিলীপ সিবিআই সেটিং নিয়ে মন্তব্য করেছেন। হিন্দি-ইংরাজিতে অনুবাদ করে দিলীপের বক্তব্যের সারাংশ পাঠাতে হবে হাইকমান্ডকে। সূত্রের খবর, শাহ এবং নাড্ডা বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে আলাদা আলাদা ভাবে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছেন।
প্রসঙ্গত, সিবিআই-সহ যাবতীয় কেন্দ্রীয় এজেন্সি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ। আর সেই মন্ত্রকের দায়িত্বে অমিত শাহ। স্বভাবতই সিবিআইয়ের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন মানে মন্ত্রক এবং সর্বোপরি মন্ত্রীর উপর প্রশ্ন। পাশাপাশি দলীয় নেতা কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে কথা বলছেন মানে কেন্দ্রকেই ঘুরিয়ে নিশানা করছেন। তাই দলের হাইকমান্ডের কাছেও তা অস্বস্তির।
আরও পড়ুন ‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত করলেন মমতা’, কড়া কথা দিলীপের
উল্লেখ্য, দিলীপকে এর আগেও হাইকমান্ড চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করে। তখন নয়া রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে নাম না করে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দিলীপ। প্রসঙ্গত, রবিবার দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেন, তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে সিবিআই অফিসারদের সেটিং আছে। তাই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ইডি-কে তদন্ত করতে পাঠিয়েছে বাংলায় দুর্নীতির ঘটনাগুলিতে। তিনি আরও বলেছেন, বছরের পর বছর সিবিআই সমঝোতা করে চলেছে। অফিসারদের একাংশ বিক্রি হয়ে গেছেন। অপরদিকে ইডি এমন সংস্থা যে কামড়াও এবং বশ মানে না।
আরও পড়ুন বিরোধী জোট না করেই মোদীকে হঠানো সম্ভব! উপায় বাতলালেন ডেরেক
সোমবারও নিজের মন্তব্যে অনড় থেকেছেন দিলীপ। তিনি বলেন, "আমি আমার মত রেখেছি। রবিবার যা বলেছি তাতেই অনড়। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। কতজন গ্রেফতার হয়েছে, কত এফআইআর হয়েছে, আমরা সিবিআইকে বিশ্বাস করেছিলাম। কে চালাচ্ছে সেটা মাথা ব্যথা নয়। কিন্তু আমরা বিচার চেয়েছিলাম। আমরা সেটা পাইনি। তাই যখন আমি রাজ্য সভাপতি ছিলাম, তখন সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাই আমরা। আমি আমার অবস্থান স্পষ্ট করেছি। ইডি নিজের কাজ করেছে বেশি দক্ষতার সঙ্গে, আমাদের ওদের উপর আস্থা রয়েছে।"
যদিও দিলীপের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন," দিলীপ বলেছেন সিবিআই এফআইআর করে না। তবে আমরা এটাও দেখেছি, এফআইআরে নাম থাকা নেতাকেও (শুভেন্দু অধিকারী) জেরা করেনি সিবিআই। যিনি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। আমরা গোড়া থেকেই সিবিআইয়ের পক্ষপাতিত্ব এবং যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। আজকে দিলীপ ঘোষ আণাদের কথাটাই তুলে ধরেছেন।"