acid affected woman stories: জীবনযুদ্ধে এমন লড়াইয়ের গল্প বিশেষ কানে আসে না। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর এমন লড়াই কাহিনী জানলে গর্বে বুক চওড়া হয় বৈকি! সাক্ষাৎ মৃত্যুকে চোখের সামনে থেকে দেখেছেন এই মহিলা। চরম পাশবিকতার পর মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল। তাতেও বিন্দুমাত্র দমেননি তিনি। দাঁতে দাঁত চেপে চলেছে লড়াই। সে লড়াই আজও জারি রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের (Baruipur) অ্যাসিড আক্রান্ত (Acid Victim) এই মহিলার জীবন-কাহিনীর পুরোটা জানলে অবাক হতেই হয়।
২০১০ সালে বারুইপুর লোকাল ট্রেনে (Local Train) ঘটে গিয়েছিল মারাত্মক সেই অ্যাসিড হামলার (Acid Attack) ঘটনা। মারাত্মক ওই ঘটনায় গুরতর জখম হয়েছিলেন মোট ১১ জন। নৃশংস হামলায় মৃত্যুও হয়েছিল একজনের। সেই ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বারুইপুরের ৫০ বছরের কাজল গায়েন (নাম পরিবর্তিত)। টানা এক বছর হাসপাতালের বেডেই কেটেছিল জীবন। অ্যাসিড হামলার জেরে তিনি বাঁ চোখে দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন। পিঠেও অ্যাসিডের দাগ স্পষ্ট। এখনও যন্ত্রণা হয় মাঝেমধ্যেই। তারপরেও হার মানেননি কাজল।
কখনও আয়ার কাজ করে, কখনও আবার রাস্তায় সবজি বিক্রি করে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। তাও ভেঙে পড়েননি কাজল। সেই কাজল এখন নিজেই মাথা খাটিয়ে একটি ভ্যান তৈরি করেছেন। আর তাতেই রুটি, ঘুগনি, চা, বিস্কুট বিক্রি করে দিনযাপন করছেন তিনি। কাজলের বেঁচে থাকার লড়াইকে স্যালুট জানিয়েছেন এলাকার লোকজন।
অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) তাঁর এই যুদ্ধ তুলে ধরেছেন। তবে কাজলের আফসোস একটাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) লক্ষীর ভাণ্ডারের (Lakshmir Bhandar) সুবিধা তিনি পাননি। তাঁর কথায়, "আমি একটা প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। তাই আমাকে লক্ষীর ভাণ্ডার দেওয়া যাবে না বলে প্রশাসনের লোকজন জানিয়েছেন।"
বারুইপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ময়লাপোতায় বাড়ি কাজলের। তিনি বিবাহিত। পারিবারিক কারণে যদিও স্বামী তাঁর সঙ্গে থাকেন না। একাই চলতে হয় কাজলকে। বাড়ি থেকে একটু দূরে প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই কাজল ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ঘুগনি, রুটি বিক্রি করতে। তাঁর ঘুগনি ১০ টাকা প্লেট ও রুটির পিস প্রতি ৪ টাকায় বিক্রি হয়। ৫ টাকায় মেলে গরম চাও। আবার ৪ টাকায় মেলে লিকার চাও। রাত ১০টা পর্যন্ত চলে কাজলের দোকান। সকাল থেকেই বাড়ির হেঁসেল সামলে নিজেই ঘুগনি, রুটি তৈরি করতে বসে পড়েন। এই ভাবেই কেটে চলেছে বছরের পর বছর।
আরও পড়ুন- Premium: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পদত্যাগ, দ্বিধাবিভক্ত আইনজীবী মহল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েই প্রশ্ন
ভ্যানে জিনিস সাজাতে সাজাতে কাজল বলেন, "অ্যাসিড হামলার পর ভাবিনি বেঁচে ফিরে এইভাবে ঘুরে দাঁড়াব। অ্যাসিড হামলার পর ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে যাই। মাথা থেকে গড়িয়ে পড়েছিল অ্যাসিড। তাতেই চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তবু এখনও চিকিৎসা চলছে। কিছু মানুষ পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিয়েছেন। মানুষের আশীর্বাদে দোকানে বিক্রি থেকে সামান্য যা আয় হয় তাতে কোনও রকমে চলে যায়।"
আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: কাল থেকেই বদলাতে শুরু করবে আবহাওয়া! আজ ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা কোন জেলায়?