বিবাহ বার্ষিকীতে স্ত্রীকে নজরকাড়া উপহার স্বামীর। উপহার হিসেবে স্ত্রীকে চাঁদে জমি কিনে দিয়েছেন এক যুবক। তরুণ ইঞ্জিনিয়রের অবাক উদ্যোগে সাড়া পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়।
ঘটনাটি মালদহের ইংরেজবাজারের ৩ নম্বর গর্ভনমেন্ট কলোনির। আমেরিকার স্পেস স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত একটি সংস্থার সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করেন গর্ভনমেন্ট কলোনির বাসিন্দা আকাশ চক্রবর্তী। ওই সংস্থার মাধ্যমেই চাঁদে জমি কিনেছেন আকাশ। দাবিমতো মার্কিন ডলার দিয়েই চাঁদে ৩ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি। আকাশ পেশায় ইঞ্জিনিয়র। তিনি ইংরেজবাজার পুরসভায় কর্মরত।
শনিবার ছিল আকাশ ও দেবযানীর বিবাহ বার্ষিকী। আমেরিকার ওই স্পেস স্টেশনের সংযোগকারী সংস্থার দেওয়া শংসাপত্র স্ত্রী দেবযানী চক্রবর্তীর হাতে তুলে দিয়েছেন স্বামী আকাশ চক্রবর্তী। প্রথমটায় কিছুই জানতেন না দেবযানী। কিন্তু পরে স্বামী আকাশ বিষয়টি খোলসা করতেই স্ত্রীর চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। চাঁদের জমির মালিক হয়ে আনন্দে ভাসছেন তরুণী।
এদিকে, চক্রবর্তী পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে আকাশ তাঁর স্ত্রীকে চমকপ্রদ এই উপহার দেওয়ার ব্যাপারে আগে থেকে কিছু জানাননি। শনিবার বিবাহ বার্ষিকীর দিনেই তিনি চাঁদে জমি কেনার নথিপত্র হাতে পেয়েছেন। পরে সেই নথিই স্ত্রী দেবযানীর হাতে তুলে দেন তিনি। হঠাৎ করে চাঁদের জমির মালিক হয়ে বেজায় খুশি দেবযানী চক্রবর্তী। এটাই তাঁর পাওয়া সেরা উপহার, এমনই জানিয়েছেন তরুণী।
বছর দু'য়েক আগেই ইংরেজবাজার পুরসভায় কর্মরত ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র আকাশ চক্রবর্তীর সঙ্গে বিয়ে হয় মালদহ শহরেরই সুকান্ত মোড়ের দেবযানী চক্রবর্তীর। প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে স্ত্রীকে আরও অনেকের মতোই উপহার দিয়েছিলেন আকাশ। কিন্তু দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকীতে আকাশের পরিকল্পনা ছিল অন্যরকম। এবার স্ত্রীকে নজরকাড়া কিছু উপহার দেওয়ার ভাবনা ছিল তাঁর। যেমন ভাবনা তেমন কাজ।
আরও পড়ুন- স্বস্তি, বাংলায় টানা চার দিন করোনায় মৃত্যু শূন্য, দৈনিক আক্রান্ত কমে ১০২
অন্যরকম কিছু উপহার দেওয়ার ভাবনা থেকেই ইন্টারনেট ঘাঁটতে শুরু করেন আকাশ। নিউ ইয়র্কের একটি সংস্থা যাঁরা চাঁদে জমি বিক্রি করে, তাঁদের খোঁজ পান তিনি। যোগাযোগ করেন সেই সংস্থার সঙ্গে। বেশ কয়েকদিন ধরে যোগাযোগের পর চাঁদে জমি কেনার ব্যাপারে কথাবার্তা পাকা হয়। চাঁদে এক একর জমি কিনে ফেলেছেন আকাশ চক্রবর্তী। মাত্র ৬৮ মার্কিন ডলার খরচ করেই নাকি সেই জমি কিনেছেন তিনি।
আকাশ চক্রবর্তী বলেন, ''দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকীটা স্বরণীয় করে রাখার জন্য স্ত্রীকে উপহারটা দিয়েছি। এটা আমার এবং আমার স্ত্রীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যদিও আদপে চাঁদে যেতে পারব কিনা জানি না। তবে অনলাইনের মাধ্যমে যে অফার পেয়েছি, সেটাই গ্রহণ করে স্ত্রীকে উপহার দিলাম।''
এদিকে এত স্বল্প মূল্যে চাঁদের জমির পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে মালদহের বুদ্ধিজীবী থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও জ্যোতিষ বিজ্ঞানীদের মতে, এটি একটি মোমেন্টো অথবা প্রতিকী পুরস্কার বলা যেতে পারে। আমেরিকার কয়েকটি সংস্থা অনলাইনের মাধ্যমে সামান্য কিছু খরচে এভাবেই চাঁদে জমি দেওয়ার কথা জানায়। কিন্তু এভাবে চাঁদের জমির মালিকানার দাবি করা সম্ভব নয় বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এটাকে এক প্রকার প্রতিকী বলাই ভালো বলে মনে করেন তাঁরা।