সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা NEET-এর দুর্নীতি কাণ্ড দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেয়। এমন দুর্নীতিতে লাগাম পরাতে জোরদার তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও দমেনি জালিয়াতরা। তাই ডাক্তারির স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় বসতে চলা এক পরীক্ষার্থী ফোনে পেলেন 'কারচুপি' করে নির্দিষ্ট বিভাগে তাঁকে উত্তীর্ণ করে দেওয়ার প্রস্তাব। তা নিয়ে স্তম্ভিত পূর্ব বর্ধমানের মেমারি পুরসভায় কর্মরত এক মহিলা চিকিৎসক ও তাঁর অভিভাবকরা।
ওই মহিলা চিকিৎসকের কাছ থেকে সবিস্তার জানার পর চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ্ সার্ভিস’ রাজ্য পুলিশের DG-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। পাশাপাশি সেই অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি স্বরাস্ট্র দফতর ও স্বাস্থ্য দফতর থেকে শুরু করে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকেও পাঠানো হয়েছে।
মেমারি পুরসভায় কর্মরত মহিলা চিকিৎসকের বাড়ি মেমারির সুলতানপুর এলাকায়। ওই চিকিৎসক তাঁর স্নাতকোত্তর পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। তবে তাঁর বাবা বলেন, "গত ১৬ জুন রাত ৮টা ৩৭ থেকে ৯টা ৪৯ পর্যন্ত দু’বার অচেনা নম্বর থেকে আমার মেয়ের কাছে ফোন আসে। ফেনে মেয়েকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, যে কোন বিভাগ নিয়ে স্নাতকোত্তর করতে চায় ও, সেই মতো ওর র্যাঙ্ক রাখা হবে। এমনকী বিভিন্ন বিভাগের জন্য ৬০ থেকে ৯০ লাখ পর্যন্ত টাকা দিতে হবে বলেও বলা হয়। শুধু তাই নয়, ফোনে জালিয়াতরা এও প্রস্তাব দিয়েছে, মেডিসিন বা শল্য বিভাগে ৯০ লাখ, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগে ৬০ লাখ টাকা দিতে হবে। এছাড়াও ত্বক, ইএনটি, রেডিওলজি বিভাগের জন্য ৭০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল জালিয়াতরা।"
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, "কোন পদ্ধতিতে নম্বর বাড়িয়ে র্যাঙ্ক দেওয়া হবে? তা মেয়ে জানতে চেয়েছিল। তখন মেয়েকে বলা হয়, ২০০ নম্বরের মধ্যে ১০০ নম্বর আপনি লিখবেন। বাকি ১০০ নম্বরের দায়িত্ব আমাদের। এই সব কোনও প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে আমার মেয়ে ফোন কলের সবিস্তার উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ডাক্তারি পরীক্ষায় দুর্নীতি বন্ধ হোক। এটাই টাই আমরা।"
আরও পড়ুন- Indian Railway: রেলগেট বন্ধ, তাও লাইন পেরোচ্ছেন? এবার ধরা পড়লেই ‘কাঁদানো’ শাস্তি! জানাল রেল
এদিকে চিকিৎসক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন ফোন জালিয়াতরা পূর্ব বর্ধমান জেলার ৪ জনের কাছে গিয়েছিল। মেমারি পুরসভার মহিলা চিকিৎসক ছাড়াও বাকি তিনজন অভিযোগ জানাতে নিমরাজি ছিলেন। ওই সংগঠনের রাজ্যের যুগ্ম সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "জালিয়াতরা এখনও এতটাই বেপরোয়া যে, আগাম নয়, র্যাঙ্ক দেখার পরে টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা চাই, এই দুর্নীতির একেবারে নির্মূল হোক। পুলিশও যাথাযথ ব্যবস্থা নিক।"