চাচার মুরগি খুনের অভিযোগ ভাইপোর হাঁসের বিরুদ্ধে। ঘটনার জল গড়াল থানা পর্যন্ত। থানার 'বড়বাবু'ই এর একটা হেস্তনেস্ত করতে পারেন, সেই প্রত্যাশাতেই পুলিশের দ্বারস্থ বৃদ্ধ। বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে থানাও। ডেকে পাঠানো হয় 'ঘাতক' হাঁসের মালিক যুবককে। পুলিশের পরামর্শেই বৃদ্ধ চাচাকে মুরগী-মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছু টাকাও দেওয়ার পরামর্শ ভাইপোকে।
অবাক করা এমনই কাণ্ড দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুরের। কাশীপুর থানাতেই আর পাঁচটা সাধারণ অভিযোগের মতো মুরগি খুনের অভিযোগ জানাতে যান এক বৃদ্ধ। কাশীপুরের চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের বামুনিয়া গ্রামের বদ্যি পাড়া। এই পাড়াতেই বাড়ি মহম্মদ আলি মোল্লার। স্ত্রী তসলিমা বিবি ও এক ছেলে ছাড়াও বৃদ্ধ মহম্মদ আলির সংসারে রয়েছে দুটি গরু ও কয়েকটি মুরগি। পরম যত্নে গরু, মুরগির প্রতিপালন করেন বৃদ্ধ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
তবে বৃদ্ধের অভিযোগ, তাঁর মুরগি পালন দেখেই 'হিংসায় জ্বলতে' থাকেন প্রতিবেশী ভাইপো। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই ভাইপো তাঁর সাধের মুরগিটিকে মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ বৃদ্ধ মহম্মদ আলির। 'সুবিচার' চেয়ে থানার বড়ববাবুর দ্বারস্থ হন বৃদ্ধ।
বৃদ্ধ বলেন, 'আমার বাড়ির পাশেই ভাইপো সরিফুল মোল্লার বাড়ি। আমার মুরগি পোষা দেখেই ও হাঁস পুষতে শুরু করে। ওর হাঁসগুলি খুব হিংস্র। আমার মুরগি উঠোনে ঘুরতে দেখলেই ওরা তেড়ে আসে। ভাইপো ও তাঁর স্ত্রী হাঁসগুলিকে বাধা দেয় না। শনিবার দুপুরে ভাইপোর একটি হাঁস আমার মুরগিকে তাড়া করে। কামড়ে মেরে ফেলে মুরগিটিকে। বাধা না দিয়ে দূরে থেকে সেই দৃশ্য দেখে মজা নিয়েছে ভাইপো। অনেক চেষ্টা করেও মুরগিটাকে বাঁচাতে পারলাম না।''
আরও পড়ুন- ঝঞ্ঝার কোপে ঊর্ধ্বমুখী পারদ, আজ থেকেই রাজ্যে বৃষ্টি
এমনকী এব্যাপারে কথা বলতে গেলে ভাইপো সরিফুল তঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ বৃদ্ধের। তিনি বলেন, ''আমার বাকি মুরগিগুলোও ও হাঁস দিয়ে খাইয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। খুব ভয়ে আছি।'' প্রথমে সুবিচার চেয়ে পাড়ার বেশ কয়েকজন ও স্থানীয় উপ প্রধান আবেদ আলির কাছে যান বৃদ্ধ মহম্মদ আলি মোল্লা। কিন্তু সুরাহা না মেলায় শেষমেশ কাশীপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। সধের মুরগির অকাল মৃত্যুতে শোকাহত বৃদ্ধ। তিনি বলেন, ''কয়েকদিন পরেই মুরগিটা ডিম পাড়ত। টানা দু'বছর কম করে পাঁচশো ডিম পাড়ত। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।''
এদিকে, বৃদ্ধের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখে কাশীপুর থানাও। থানায় ডেকে পাঠানো হয় অভিযুক্ত যুবক সরিফুল মোল্লাকে। তাঁকে মুরগী মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দিতে বলা হয় বৃদ্ধ মহম্মদ আলি মোল্লাকে।