দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ঝড় তুলতে মরিয়া তৃণমূল। দুপুর হতেই অভিষেকের নেতৃত্বে গান্ধীজয়ন্তীতে রাজঘাটে বসে পড়ে ধর্না-কর্মসূচি শুরু করে তৃণমূল নেতৃত্ব। এই কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত হলেও তৃণমূলকে এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশের কোনও লিখিত অনুমতি ছিল না। বাংলার শাসক দলের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি হলেও রাজঘাটের বাইরে মোতায়েন ছিল বিশাল সিআরপিএফ ও পুলিশ। অভিযোগ, অবস্থান কর্মসূচির কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই সিআইএসএফ ও দিল্লি পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে রাজঘাট ছাড়তে বলে ওখানে জমায়েতকারী তৃণমূলীদের। তারপরই রাজঘাট ছাড়েন জোড়া-ফুল নেতারা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজঘাটের বাইরে সাংবাদিক বৈঠকের সময় উত্তেজনা ছড়ায়। সাধারণ মানুষের রাজঘাটে প্রবেশে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিষেককে ওই জায়গা ছাড়তে বলে দিল্লি পুলিশের এক অফিসার। কিন্তু সেভাবে কর্ণপাত করেননি তৃণমূলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড'। এরপরই সক্রিয় হয় পুলিশ। সরানো হয় সেখানে উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। ফলে বাধ্য হয়ে ওই জায়গা ছেড়ে চলে যান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
বাংলার শাসক দলের নেতৃত্বের এই আচরণকে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী! তাঁর কথায়, 'বাংলার বাঘ দিল্লিতে ইঁদুর।'
অভিষেকের অভিযোগ-
'আমরা গান্ধীজির পথকে পাথেয় করে শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে বাংলার অধিকারের দাবি জানিয়েছি। কোনও মোদী বিরোধী বা রাজনৈতিক স্লোগান ছিল না। তাও পুলিশ বার বার এসে ধর্না তুলে নিতে বলছে। পুলিশ সিআরপিএফ ধাক্কা করছে, তৃণমূল কর্মীদের সরিয়ে দিচ্ছে। তাও আমরা আমাদের ২ ঘন্টার কর্মসূচি শেষ করেই ধর্না অবস্থায় শেষ করেছি। এর জবাব আগামিতে আমরা পাবেন। আপনার মাঠ, আপনার রেফারি, তাও দিল্লি থেকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি কেন্দ্রকে। বিজেপি আজও বলছে চারটে জেলায় দুর্নীতি হয়েছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনায়। তর্কের খাতিরে সেটাই ধরে নিলাম। তাগলে কেন বাকি জেলাগুলোর টাকা আটকে রেখেছেন? বাংলায় গিয়ে বিজেপির বারে বারে পরাজয়ের কারণেই গায়ে জ্বালা ওদের। তাই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা।'
রাজঘাটের বাইরে অভিষেকের সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ সেখান থেকে সকলকে সরিয়ে দেন। দর্শনার্থীদের অসুবিধার কথা বলে পুলিশ। কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি পুলিশকে নিশানা করেন। বলেন, 'নরেন্দ্র মোদীর পুলিশ আমাদের ভয় পেয়েছে। সেটা স্পষ্ট করে দিল।' এইসময় দেখা যায়, একটি গাড়িতে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী?
রাজভবন থেকে কলকাতার মেয়ো রোডে বিজেপির কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'বিক্ষোভ করতে গিয়েছিল ওরা। ২০ মিনিট পরই লাঠি উঁচিয়েছে সিআইএসএফ আর দিল্লি পুলিশ। সকলে চলে গিয়েছে। ওরা বাংলায় বাঘ, সিংহ। দিল্লিতে লাঠি দেখাতেই ইঁদুর।'
মমতার বদলে কেন অভিষেকের নেতৃত্বে দিল্লিতে তৃণূলের 'বঞ্চনা প্রতিবাদ'? শুভেন্দুর জবাব, 'মমতা ব্যানার্জী টাকা চুরি করেছে, তাই যাননি। প্রশ্ন তুলুন ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়ো জবকার্ডগুলো কোথায়?'
আরও পড়ুন- এখনও অনুমতি পায়নি তৃণমূলও, সেই যন্তর মন্তরেই ধর্নায় বাংলার চাকরিপ্রার্থীরা