মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে আনিস খানের দেহ দ্বিতীয়বারের জন্য ময়নাতদন্ত করতে চায় সিট। ইতিমধ্যেই সেই আর্জি জানানো হয়েছে জেলা ম্যাজিস্ট্রের কাছে। অনুমতি চাইতে বুধবার সকালে মৃতের বাড়িতে যায় সিটের আধিকারিকরা। কিন্তু, ছোট ছেলের দেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দেয়নি আনিসের বাবা সালেম খান। গত শনিবার ভোররাতে আনিস খানের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কারচুপি রয়েছে বলে প্রথম থেকেই সরব সালেম খান ও তাঁর বড় ছেলে সাবির।
অসুস্থ অবস্থায় খাটে শুয়ে শুয়েই এদিন সিটের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালেম খান। হাত জোড় করে বলেন, 'আমি ময়নাতদন্তের অনুমতি দিচ্ছি না। পরিষ্কার আমি জানিয়ে দিচ্ছি, এখন ময়নাতদন্ত হবে না। আমি সময়েই করাব। যখন সিবিআই আসবে, তখনই করাব।'
বুধবার সকালে বাগনান থানার এএসআই সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী আনিসের বাড়িতে ঢোকে। সঙ্গে ছিল ব়্যাফ। এরপরই আনিসের বাবার থেকে ছেলের দেহ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলার আর্জি জানান। আমতা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে নিহত ছাত্রনেতার বাবার সঙ্গে কথা বলেন। যদিও পত্রপাট সেই আর্জি খারিজ করে দেন আনিসের বাবা।
গত শুক্রবার রাতে পুলিশের পোশাকে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতে ঢোকে কয়েকজন। এরপরই ছাদ থেকে নীচে কিছু পড়ার শব্দ পান পরিবারের লোকেরা। দেখা যায়, বাড়ির ছোট ছেলে আনিস পড়ে রয়েছে। ততক্ষণে চলে গিয়েছে পুলিশের পোশাকে আসা তিনজন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আনিসের মৃত্যু হয়। মৃত ছাত্রনেতার বাবা সালেম খানের অভিযোগ, তাঁর ছোট ছেলেকে পুলিশ খুন করেছে। সিবিআই তদন্তের দাবি তোলে খান পরিবার।
ঘটনার অভিঘাতের তীব্রতা দেখে সিট গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সিট আধিকারিকরা তদন্তে নেমেই মঙ্গলবার সকালে আমতলা থানার তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করেন। দুপুরে আনিসদের বাড়িতে যান সিটের সদস্যরা। তবে, রাজ্য পুলিশের নেতৃত্বে সিটের তদন্তে খান পরিবারের আস্থা নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন সালেম থান। এমনকী আনিসের উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটিও সিট-কে দিতে অস্বীকার করেন তাঁর বাবা। জানান, সিবিআই তদন্তকারী বা আদালতেই ওই মোবাইল জমা দেবেন তিনি। সালেম খানের সাফ কথা, 'যাঁরা আমার ছেলেকে মারল বলে আমার অভিযোগ, সেই পুলিশের তদন্তে আনাদের কোনও ভরসা নেই। আমরা সিবিআই তদন্ত চাইছি।'
এদিকে, আনিসের দাদার সাবির খানের দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁর কাছে হুমকি ফোন এসেছিল। পরিবার সিবিআই তদন্ত চাওয়ায় নিহত ছাত্রনেতার বাবা এবং দাদাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, শুক্রবার রাতে আমতলার মোবাইল ভ্যানে কর্তব্যরত ৪ জন পুলিশকর্মীকে তলব করা হয়েছে ভবানীভবনে।