Woman dies by suicide after flogging in Bengal: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে জলপাইগুড়ি জেলার ফুলবাড়ি এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের সালিশি সভায় মারধর। অপমানিত হয়ে আত্মঘাতী হলেন এক মহিলা। পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুরের চোপড়াতে কয়েক দিন আগেই পরকীয়ার জেরে তরুণ-তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা সামনে এসেছিল। এবার জলপাইগুড়িতেও একইরকম ঘটনায় মহিলার চরম পদক্ষেপ।
বগুরাভিটা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মহিলার স্বামী বলেন, “গ্রামের কয়েকজন মহিলা পঞ্চায়েতের সামনে তাঁকে মারধর করার পর আমার স্ত্রী কিছু বিষাক্ত পদার্থ পান করে তাঁর জীবন শেষ করে। আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি যে এই মহিলাদের কারণে আমার স্ত্রী মারা গেছে কারণ তাঁকে সালিশি সভায় তলব করা এবং প্রকাশ্যে মারধরের অপমান সহ্য করতে পারেনি।”
অভিযোগ করা হয়েছিল যে মহিলার একটি যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এবং তিনি ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ১০ দিন আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। সেই সময় তাঁর স্বামী নিউ জলপাইগুড়ি থানায় তাঁর নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন।
তবে গত শনিবার তাঁর হদিশ পাওয়া যায় এবং তিনি বাড়ি ফিরে আসেন বলে জানা গেছে। “একবার সে ফিরে এলে, আমার স্ত্রীকে পঞ্চায়েত প্রধান এবং তৃণমূল নেত্রী মালতি রায় এবং তাঁর স্বামী শঙ্কর রায় ডেকে পাঠান। আমরা সেখানে গেলে তাঁদের সমর্থকরা আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করতে শুরু করে,” স্বামী বলেন।
মালতী এবং শঙ্কর রায় অবশ্য সালিশি সভা (ক্যাঙ্গারু কোর্ট) করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শঙ্কর রায় বলেন, “তাঁদের পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার কথা থাকলেও তাঁরা পঞ্চায়েতে আসেন। এই মহিলা এর আগে অন্য যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সম্ভবত এই কারণেই তাঁদের প্রতিবেশীরা তাঁকে ডেকে মারধর করে। সেখানেও আমরা উপস্থিত ছিলাম না। যখন সালিশি সভা চলছিল তখন আমি সেখানে পৌঁছলাম এবং মহিলা বললেন তিনি শৌচালয়ে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর আমরা জানতে পারি তিনি অ্যাসিড খেয়েছেন।"
আরও পড়ুন Chopra Assault Case: ‘আর একটাও সালিশি সভা বসলে…!’, হামিদুলকে ফোন করে জোর ধমক মমতার
নিউ জলপাইগুড়ি থানার ওসি নির্মল দাস বলেছেন, দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে, একটি নির্যাতিতার স্বামী এবং তাঁর ভাইয়ের অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেছেন, 'মমতার শাসনে অধিকাংশ মহিলা নির্যাতিত হচ্ছেন। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। কাউকে সালিশি সভায় ডেকে তাঁকে মারধর করা জঘন্য অপরাধ।'
যদিও তৃণমূল সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, 'এই ধরনের ঘটনা সামাজিক ব্যাধি। এগুলিকে রাজনীতিকরণ করা উচিত নয়। সমস্ত রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে এসে এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে উদ্যোগ নিতে হবে।'