দিল্লি হাইকোর্টে পিছল অনুব্রত মামলার শুনানি। অর্থাৎ, চলতি সপ্তাহেই অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লিতে নিয়ে যেতে পারবে না এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুব্রতর বিরুদ্ধে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারিও করতে পারবে না রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট, সাফ জানাল আদালত। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতারের পর অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চায় ইডি। সেব্য়াপারে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল ইডি। তবে ইডির সেই আবেদনকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।
যা জেরার তা হোক বাংলাতেই। কোনওভাবেই দিল্লি যেতে চান না কেষ্ট। গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন বন্দি তিহাড় জেলে। সায়গলকেও দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করেছে ইডি। তারপর থেকে তিহাড় জেলেই ঠাঁই হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। গরু পাচার চক্রের মাথা এনামুলও তিহাড়ের গারদের পিছনেই দিন কাটাচ্ছে। এই অবস্থায় তাঁকেও দিল্লি নিয়ে গেলে তিহাড়-যাপনের ভয় পাচ্ছেন কেষ্ট। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে আসানসোল জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডল। পরে গরু পাচার মামলাতেই ইডিও তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘রোজ বোমাবাজি-খুন, দুষ্কৃতীরা সব তৃণমূলের নেতা’, নওদার খুন নিয়ে কটাক্ষ দিলীপের
ইডি কেষ্টকে গ্রেফতারের পর দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দেয়। গরু পাচার মামলার তদন্তে নেমে কেষ্টর পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ এই সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রত ও তাঁর আত্মীয়দের। এছাড়াও একগুচ্ছ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মিলেছে কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট থেকে শুরু করে কয়েকশো কোটির নগদ। সেব্যাপারেই এবার দিল্লি নিয়ে গিয়ে কেষ্টকে জেরা করতে চান ইডির আধিকারিকরা।
অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যেতে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন জানায় ইডি। সেই খবর পাওয়ার পরেই ইডির তৎপরতা রুখতে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। ইডির তৎপরতা ভেস্তে দিতেই কেষ্টর এই আবেদন। তবে দিল্লি হাইকোর্টে আপাতত পিছিয়ে গিয়েছে অনুব্রত মামলার শুনানি। সুতরাং দিল্লি হাইকোর্টের চূড়ান্ত নির্দেশের আগে আপাতত ইডি দিল্লি নিয়ে যেতে পারছে না অনুব্রত মণ্ডলকে।
এদিকে, জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষে আজ ফের একবার অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোল আদালতে তোলে সিবিআই। এদিন অবশ্য জামিনের আবেদন করেননি অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী। আদালত ফের অনুব্রতকে আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল কিছু বলতে চান কিনা এদিন তা জিজ্ঞাসা করেছিলেন বিচারক। যদিও হাতজোড় করে কেষ্ট বলেন, 'আমার কিছুই বলার নেই'। তবে এদিন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী চার্জশিটের কপি ও অনুব্রত মণ্ডলের মোবাইল ফোনটি ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন। জেরার সময় অনুব্রত মণ্ডলের মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।