শরীর কেমন আছে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর মিলছে, তবে লটারি প্রশ্নে অধিকাংশ সময়েই মুখে কুলুপ অনুব্রত মণ্ডলের, এমনই খবর সূত্রের। বোলপুরের একটি লটারির দোকান থেকে কেনা টিকিটেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির নামে এক কোটি টাকা পুরস্কার ওঠে। যদিও কেষ্ট মণ্ডল তাঁর দোকান থেকে ওই লটারির টিকিটটি কেনেননি বলেই দাবি করেছেন খোদ লটারি বিক্রেতা। বিষয়টি নিয়ে শনিবার আসানসোল সংশোধনাগারে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করে সিবিআই। সূত্রের খবর, অধিকাংশ প্রশ্নেরই কোনও উত্তর দেননি কেষ্ট।
লটারি রহস্যের কিনারা করতে মরিয়া সিবিআই। আসানসোল আদালতের অনুমতি নিয়ে শনিবার জেলে গিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে জেরা করেছেন তাঁরা। লটারির টিকিট কি আপনারই? টিকিট কি অন্য কাউকে দিয়ে কিনিয়েছিলেন ? পুরস্কার উঠেছে জানলেন কীভাবে? সিবিআই গোয়েন্দাদের এমনই বহু প্রশ্নের উত্তর গতকাল এড়িয়ে গিয়েছেন কেষ্ট মণ্ডল, এমনই দাবি সূত্রের। তবে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির কথা জিজ্ঞাসা করলে অনুব্রত জবাব দিয়েছেন।
জেলে কেমন আছে তাঁর শরীর? এপ্রশ্নের উত্তরে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি জানান, তিনি ভালো নেই। শারীরিক একাধিক সমস্যা রয়েছে তাঁর। মোটের উপর লটারি সংক্রান্ত প্রশ্নে গোটা সময়টাই চূড়ান্ত অসহোগিতা করে গিয়েছেন কেষ্ট, এমনই দাবি সিবিআই সূত্রের। লটারিতে অনুব্রত মণ্ডলের এক কোটি টাকা পুরস্কার জেতার খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। বিতর্ক বাড়তেই খবরের সত্যতা যাচাইয়ে ময়দানে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
আরও পড়ুন- ‘বাঘ অনুব্রত বেরলেই শিয়ালরা লেজ গুটিয়ে পালাবে’, বীরভূমে জোর হুঙ্কার ফিরহাদের
কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্যে অন্য কারও কাছ থেকে কোটি টাকা পুরস্কার জেতার ওই টিকিটটি হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। উল্লেখ্য, সাধারণভাবে লটারিতে এক কোটি টাকা পুরস্কার জিতলে পুরো টাকা পাওয়া যায় না। কর ও অন্য টাকা কেটে নিয়ে বিজয়ীকে ৬৫ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। এখানেই 'টুইস্ট'। অভিযোগ, এক্ষেত্রে আসল বিজয়ীকে এর চেয়েও বেশি টাকা দেওয়া হতে পারে বলে সন্দেহ।
অর্থাৎ, পুরস্কার মূল্য হিসেবে পাওয়া ৬৫ থেকে ৭০ লক্ষ টাকার বদলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে। কারও ভাগ্যে এক কোটি টাকাও জুটে যেতে পারে। এসবই করা হতে পারে কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্য নিয়ে। অনুব্রত মণ্ডেলর লটারিতে এক কোটি টাকা পুরস্কার পাওয়ার পিছনেও এমন কোনও রহস্য রয়েছে কিনা তা জানতেই মরিয়া সিবিআই।