তিহাড় জেলে তাঁর মন টিঁকছে না। দিন কয়েক আগেই রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে আসানসোল সংশোধনাগারে ফেরার আবেদন জানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু এই আর্জির শুনানির আগেই বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির আস্বস্তি বাড়ল। দিল্লি হাইকোর্টে বুধবার ছিল অনুব্রতর জামিন মামলার শুনানি। কিন্তু বিচারপতি দীনেশ শর্মার বেঞ্চ এই মামলা পিছিয়ে ২৭ জুলাই পর্যন্ত পিছয়ে দেন। অর্থাৎ আরও প্রায় ৪ মাস তিহাড় জেলেই থাকতে হবে বীরভূমের 'বাঘ' কেষ্টকে।
কেন অনুব্রতর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করছে ইডি? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আিনজীবীর থেকে এদিন তা জানতে চান বিচারপতি। জবাবে ইডির তরফে বলা হয়, অনুব্রতকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন আগেই জানানো গিয়েছিল। কিন্তু অনুব্রতর পক্ষ থেকে একাধিক মামলা হওয়ায় তাঁকে হেফাজতে নিতে দেরি হয়। পাল্টা অনুব্রতর আইনজীবীর দাবি, কেন তাঁর মক্কেলকে ইডি হেফাজতে নিল তা অস্পষ্ট। এখনও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট জমা দেওয়া হয়নি।
উভয় তরফের সওয়ালের পর বিচারপতি দীনেশ শর্মার বেঞ্চের নির্দেশ, ইডিকে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতে তদন্তের নতুন রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেই রিপোর্টের কপি পাঠাতে হবে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীকে। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুব্রতকে ভার্চুয়ালি আদালতে পেশের আর্জিও এদিন মেনে নিয়েছে হাইকোর্ট।
গরু পাচার মামলায় গত বছরের অগাস্টে বীরভূমের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তদন্তে তাঁর নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তির খোঁজ মেলে। এরপর ইডি-র নজরে পড়েন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, অনুব্রতকন্যা সুকন্যাকে দিল্লিতে জেরা করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অনুব্রত ও সুকন্যার হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকেও। পরে মণীশকে গ্রেফতার করা হয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অনুব্রতকে জেরার পর গত ১৭ নভেম্বর গ্রেফতার করে ইডি। এরপর তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করার আবেদন জানায় ইডি। বহু টালবাহানার পর কেষ্টর দিল্লি যাত্রা রোখা যায়নি। দিল্লিতে ইডি হেফাজত শেষে আপাতত তিহাড় জেলই ঠাঁই হয়েছে তৃণমূলের এই জেলা সভাপতির।