মমতা বলেছিলেন 'বীর'। আর ফিরহাদ বললেন 'বাঘ'। গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে যে দল রয়েছে সেই বার্তাই ফের প্রকাশ্যে এলো।
আপাতত আসানসোলের জেলই বীরভূমের কেষ্টর ঠিকানা। তাঁর গ্রেফতারি, নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তির হদিশ ঘিরে রাজনীতিতে নানা চর্চা। কিন্তু নির্বিকার তিনি। জেল থেকেই পঞ্চায়েতের আগে সংগঠনকে পোক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যে, দলের অনুগত তার প্রমাণ একাধিকবার দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। নেত্রীর পর এবার রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কেষ্টর প্রশংসা করে যেন সেই আনুগত্যেরই প্রতিদান দিলেন।
শনিবার রামপুরহাটে ছিল তৃণমূলের সভা। সেখানেই ফিরহাদ হাকিম রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'বনের বাঘ না থাকলে শিয়ালরা লাফালাফি করে। বাঘ ফিরে এলে শিয়ালরা লেজ গুটিয়ে পালায়। বীরভূমের বাঘকে তোমরা কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছো। সারাজীবন আটকে রাখতে পারবে না। বাঘ বেরিয়ে এলে শিয়ালরা সব লেজ গুটিয়ে খাঁচায় ঢুকে যাবে।'
আরও পড়ুন- প্রাপ্য চেয়ে চেয়ে প্রাণপাত নবান্নের, শেষ পর্যন্ত বাংলায় এল কেন্দ্রের টাকা
পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলরা জেলে যেতেই তৃণমূলকে 'চোরের দল' বলে দেগে দিতে মরিয়া বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। জনমনে বিরূপ প্রভাব যে পড়েছে তা মানছেন জোড়-ফুলের শীর্ষ নেতারাও। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'আজ যারা হুক্কা হুয়া করছে, তৃণমূলের সবাইকে চোর বলার অধিকার কারোর নেই।'
অনুব্রত লটারিতে কোটি টাকা জয় নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। বোলপুরে গিয়ে লটারির টিকিটের দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সরব তৃণমূল। ফিরহাদ বলেছেন, 'লটারি কেন পেল? আরে ভাই, তোমাকে খোঁজ নিতে হবে না। ভগবানকে বল ভাগ্য ফেরাতে। এগুলোকে বলে খিল্লিপনা।'
ফিরহাদ হাকিমকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, 'অনুব্রত মুখ খুললেই তৃমূলের সমস্যা। তাই নেত্রী থেকে মন্ত্রী ওকে কদর করছেন। আসলে গুন্ডা ছাড়া তৃণমূলের ভরসা নেই বোঝা যাচ্ছে। আর এভাবেই ওরা দুর্নীতিতে প্রশয় দিয়ে যায়।'
অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে কী বলেছিলেন মমতা?
গত ৮ সেপ্টেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'বেচারা কেষ্টর নিজেরই শরীর খারাপ। বগটুইয়ের ঘটনার সময়ও কেষ্টকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে ওঁকে নজরবন্দি করে রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কি কেষ্টকে আটকানো সম্ভব হয়েছে? ভাবছেন কেষ্টকে জেলে বন্দি করে রেখে লোকসভার দুটি আসন দখল করবেন? সে গুড়ে বালি। কেষ্ট যতদিন ফিরে না আসছে, লড়াই আরও তিনগুণ বাড়বে। বীরের সম্মান দিয়ে কেষ্টকে জেল থেকে বের করে আনতে হবে। এই মানসিকতা নিয়ে তৈরি থাকুন। বীরভূম জেলা হারতে শেখেনি, ওটা লাল মাটির রাস্তা, লাল মাটির দেশ। এটা সবসময় মাথায় রাখবেন।'
আরও পড়ুন- ‘লকেট অনেক পুরনো দিনের…’, বিজেপি সাংসদ প্রসঙ্গে নরম কুণাল!