বিস্ফোরক অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যার বিরুদ্ধে। টেট পাশ না করেই সুকন্যা প্রাথমিকে শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন বলে আদালতে অভিযোগ করলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। শুধু সুকন্যা মণ্ডলই নন, বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির পাঁচ আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগ যে, শিক্ষিকার চাকরির নিয়োগ পাওয়ার পর সুকন্যা মণ্ডল একদিনও বোলপুর কালীকাপুর প্রাথমিক স্কুলে পড়াতে যাননি। হাজিরার জন্য অনুব্রতর বাড়িতে রেজিস্ট্রার খাতা আনা হত।
প্রাথমিকের শিক্ষিক পদে চাকরির জন্য অন্যতম শর্ত হচ্ছে টেট পাস করা। কিন্তু সেই পরীক্ষাতেই সুকন্যা মণ্ডল পাস করেননি বলে অভিযোগ উঠছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টের মধ্যে সুকন্যা সহ বাকি অভিযুক্তদের টেট পাসের সংশাপত্র ও নিয়োগের নথি সহ আদালতে হাজিরা দিতে হবে। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বুধবারের মধ্যে এ দিনের রায় আদালতের প্রশাসন বীরভূমের পুলিশ সুপারকে জানিয়ে দেবে।
অভিযোগ, সুকন্যার মতই টেট না দিয়ে চাকরি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের ভাই, ভাইপো ও দুই ঘনিষ্ঠ। তালিকায় উঠে আসছে, সুমিত মণ্ডল, অর্ক দত্ত, সাত্যকী মণ্ডল, কস্তুরি চৌধুরী ও সুজিত বাগদির।
বিষয়টি তাঁর শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন ঘটেনি, ফলে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন ব্রাত্য বসু।
আরও পড়ুন- মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, বাবার পথে হেঁটেই সিবিআই-কে ফেরালেন অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর সিবিআই গ্রেফতারির পরই গোয়েন্দা স্ক্যানারে তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। বুধবারই বোলপুরের নীচুপট্টির বাড়িতে গিয়ে সুকন্যাকে নোটিস দিয়েছে সিবিআই। তবে, মানসিক বিপর্যয়ের জেরে তিনি গোয়েন্দাদের সঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি বলে সিবিআই সূত্রে খবর। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষিকা হয়েও সুকন্যার নামে এত সম্পত্তি হল কীভাবে, একাধিক সংস্থার ডিরেক্টরই বা কীভাবে হলেন সুকন্যা, সেটাই জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। সুকন্যার নামে থাকা সম্পত্তির সঙ্গে গরু পাচারের টাকার কোনও যোগ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে পরেশ অধিকারীর মেয়ের বিরুদ্ধে একাদশ, দ্বাদশে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ উঠেছিল। নাম পরে থাকলেও অঙ্কিতা আধিকারীর নাম প্যানেলের প্রথমে আনা হয়েছিল। নপথ্যে প্রভাবশালী বাবার সুপারিশ কাজ করেছিল বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের নির্দেশে, চাকরি খুইয়েছেন অঙ্কিতা, বেতনবাদ অর্থও বঞ্চিত ববিতা সরকারকে দিতে হয়েছে তাঁকে। একই পরিণতি হবে অনুব্রত কন্যা সুকন্যার? তা নিয়েই এখন জোর চর্চা।