বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার সোশাল মিডিয়া পোস্টকে ঘিরে ফের বিৃতর্ক। প্রশ্নের মুখে দলেরই জেলা সভাপতি! নিজের পোস্টে গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতার প্রশ্ন, 'আর কতদিন যে চোর মুক্ত বিজেপি চাই বলে গলা ফাটাতে হবে কে জানে !!!????'
রবিবার কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আসর। যা নিয়ে হইচই চলছে। তারমধ্যেই এই আয়োজনে ভিআইপি কার্ড বিলি ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনেছেন বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ। এক্ষেত্রে তিনি জনৈক অনিল সিং মানে এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টও শেয়ার করেছেন।
কী অভিযোগ?
অনিল সিংয়ের ফেসবুক পোস্টে লেখা রয়েছে, '২৪,১২,২০২৩ তারিখ রবিবার কলকাতা ব্রিগেডে লক্ষ্য কণ্ঠে গীতা পাঠ। সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে সেখানে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ব্যবস্থাপনায় যারা আছেন তারা। যারা যাবেন তাদের জন্য গেট পাশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু, কিছু, ভিআইপি, লোকদেরকে ভিআইপি কার্ড দেওয়া হয়েছে। কোথাও এক হাজার টাকা নিয়ে কার্ড দিতে হবে এই ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু বীরভূম জেলার বিজেপির জেলা সভাপতির, নির্দেশে বীরভূম জেলার নলহাটি এলাকা হইতে কিছু কিছু লোককে কার্ড বিলি করতে দেওয়া হয়েছে। তারা একটি কার্ডে এক হাজার ১০০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে।'
অনুপম হাজরার বক্তব্য
অনিলের এই অভিযোগই শেয়ার করেছেন অনুপম হাজরা। সঙ্গে লিখেছেন, 'এটা যদি সত্যি হয় তাহলে তো সাংঘাতিক ব্যাপার !!! শেষ পর্যন্ত "লক্ষ্য কণ্ঠে গীতা পাঠ" - এখান থেকেও দুর্নীতি, টাকা উপার্জন !!! ??? হায়রে - এরা আদৌ হিন্দু !!!??? অবশ্য সংগঠনের কাছের লোক হলে শত চুরি এবং দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও কোন পরিবর্তন হবে না, উল্টে মেয়াদকাল আরো বাড়তে পারে !!! আর কতদিন যে "চোর মুক্ত বিজেপি চাই" বলে গলা ফাটাতে হবে কে জানে !!!????'
গত কয়েক মাস ধরেই বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরকে নিশানা করেছেন অনুপম হাজরা। দলের কেন্দ্রীয় নেতার বারংবার চাঁচাছোলা বক্তব্যে অস্বস্তি পড়তে হয়েছে সুকান্ত মজুমদারদের। যা নিয়ে একে অপরকে চ্যালেঞ্জও ছুড়েছেন উভয়-ই। অনুপমের দাবি, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী তাঁর যেসব স্নেহধন্যদের বীরভূম জেলার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন তাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। গত ৮ নভেম্বর খয়রাশোলে অনুপম হাজরার সভার অস্থায়ী মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছিল। অনুপমের অভিযোগ ছিল, বীরভূমের বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার 'লেঠেল বাহিনী' ওই ভাঙচুর চালিয়েছিল। দাবি করেছিলেন, 'ধ্রুব সাহারা আসলে চায় না তৃণমূলীদের সিন্ডিকেটের পর্দা ফাঁস হয়ে যাক।'
আরও পড়ুন- নিয়োগ দুর্নীতি মামলা: ‘চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ২৭ লাখ’, আইনজীবী বিকাশরঞ্জনকে নিশানা কুণালের
বেশ কিছুদিন ধরেই বঙ্গ বিজেপিতে স্বজনপোষন, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে 'চোর মুক্ত বিজেপি' ধ্বনি তুলেছেন অনুপম হাজরা। দাবি করেছেন, 'বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাজি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন। জেলায় জেলায় গিয়ে পদে নেই, বসে গিয়েছে, এমন কর্মীদের চাঙ্গা করতে। সেই কাজ আমি করে যাচ্ছি।' এই আবহে ফের বীরভূমের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাকে নিশানা করে ভয়ঙ্কর দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আনলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক।