সাংগঠনিক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরে বিবাদ চরমে। এর আগে সল্টলেক সহ জেলার একাধিক দফতরে জোরদার বিদ্রোহ হয়েছে। মুখ খুলেছেন বিধায়ক অসীম সরকাররা। এবার বিস্ফোরক পোস্ট করলেন গেরুয়া দলের কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরা। কারোন নাম না করেই বঙ্গ বিজেপি নেতাদের 'বিভীষণ' বলে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক। যা নিয়ে মুখ খুলেছেন খোদ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুনদার।
মঙ্গলবার গঠিত হয় বিজেপির বোলপুর সংগঠনিক জেলা কমিটির। যা নিয়েই ক্ষোভ-বিক্ষোভ। আর এই প্রসঙ্গেই ফেসবুক পোস্টে তোপ দেগেছেন অনুপম।
কী লিখেছেন অনুপম হাজরা?
'গতকাল বোলপুর সংগঠনিক জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে অজস্র ফোন পেয়েই চলেছি। সকাল সকাল ঘুমও ভাঙলো সে রকম কিছু ফোনে । তাই দু-চার কথা লিখতে বাধ্য হচ্ছি !!!'
ঘরের শত্রু বিভীষণ
'আগামী দিনে যে নির্বাচন টি আসছে, সেটি হলো মাননীয় নরেন্দ্র মোদি জির তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াই ! স্বাভাবিকভাবেই আমরা যারা আবেগ দিয়ে বিজেপি টা করি এবং মাননীয় নরেন্দ্র মোদী Narendra Modi'জি কে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি তারা জানি এই নির্বাচনে অন্তত নূন্যতম কোনো রকম ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকা চলবে না । আর এই নির্বাচনে জেতার জন্য টিম তৈরি করতে গিয়ে, সংগঠন এবং গ্রহণ যোগ্যতা আছে এরকম মানুষগুলোকে বেছে বেছে বাদ দিয়ে, নিজের কাছের মানুষগুলোকে যারা জায়গা করে দেন, তাঁরা এক প্রকার ঘরের শত্রু বিভীষণ।
আর এই ধরনের বিভীষণ দের জন্যই আমরা মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখে থাকি । কারন ঘরের মধ্যে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও, যখন তা শোনা হয় না , তখন মানুষ ধৈর্য হারিয়ে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । আর জেলায়-জেলায় এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ গুলোকে দেখেও না দেখার ভান করা বিভীষণদেরই অনুগত দু-এক জন স্তাবক, যারা টিভি/মিডিয়া'র সামনে বসে - "আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, আমাদের মধ্যে কোনো বিক্ষুব্ধ নেই" - বলে নিজেদের দোষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন… …তাঁকে/তাঁদের কে আমার প্রশ্ন - "তাহলে জেলায়-জেলায় প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ গুলো হচ্ছে কেনো ????'
আরেকটু ধৈর্য ধরুন, কিছু একটা হবে!
'সবশেষে এটাই অনুরোধ রাখবো যে, যে সমস্ত কাজের মানুষগুলি জেলা কমিটিতে জায়গা পেলেন না, তাঁরা যেন অন্তত অভিমানে তৃণমূলে যোগ দেবেন না, কারণ মোদীজি কে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী'র আসনে বসাতে গেলে প্রত্যেকটি লোকসভা আসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; দরকার পড়লে যেখানে-সেখানে ঘরের শত্রু বিভীষণদের মুখোশ খুলে দিন কিন্তু কেউ মান-অভিমানে বসে যাবেন না, তাহলে নরেন্দ্র মোদিজি'র সঙ্গে বেইমানি করা হবে !!!
আমার এই পোস্ট দেখার পর কিছু জন আবার আদিখ্যেতা করে মন্তব্য করতে পারেন "দাদা ঘরের কথা ঘরের মধ্যে বললেই ভালো হতো" ! তাদের উদ্দেশ্যে বলি, দিনের পর দিন মাসের পর মাস, বারবার ঘরের মধ্যে বলেও যখন কাজ হয় না বা শোনা হয় না, তখনই মানুষ প্রকাশ্যে বলতে বাধ্য হয় !!! সবশেষে বলি, আরেকটু ধৈর্য ধরুন, কিছু একটা হবে।'
অনুপম হাজরার ফেসবুক পোস্ট
অনুপম হাজরার অভিযোগ নিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বাইরে কিছু বলবো না।'