শাহ-নাড্ডা রাজ্য সফরের দিনই বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণ করা হয় অনুপম হাজরাকে। এই সিদ্ধান্তের ঘন্টা তিনেকের মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ। দাবি করেন, 'কিছু শর্ত মানলে আবার সব আগের মতো হয়ে যাবে'। তাহলে কী ভুল শুধরে নিতে আগ্রহী অনুপম? জল্পনা তীব্র হয়। বুধবার বেলা বাড়তেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন খোদ অনুপম হাজরা। বলেন, ' দু'দিনের জন্য হিমালয়ে যাচ্ছি, ফিরে যা বলার বলব।'
হিমালয়ে কেন যাচ্ছেন তিনি? ওই দু'দিনের মধ্যে কী পদ ফিরে পাবেন? সে সম্পর্কে অবশ্য খোলসা করেননি সদ্য পদ খোয়ানো এই বিজেপি নেতা। হতাশা কাটাতে, নাকি দলের মধ্যেই বিরুদ্ধ শিবিরের নেতাদের ঘায়েলের কৌশল তৈরিতে অনুপমের এই হিমালয় যাত্রা? তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন- ‘চৈতন্যদেবের সার্থক উত্তরসূরী মমতা’, শোরগোল ফেলা দাবি ব্রাত্য’র
গত কয়েক মাস ধরেই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশকে লাগাতার নিশানা করছিলেন অনুপম হাজরা। বাংলার বিজেপিতে স্বজনপোষণ করলেই পদধিকারী হওয়া যায় বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছিলেন তিনি। প্রকাশ্যে সুকান্ত মজুমদার ও অমিতাভ চক্রবর্তীকে আক্রমণ করেন। রাখঢাক না করে বীরভূমের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা-কে তৃণমূলের সহযোগী বলে দাবি করেছিলেন। জেলা সভাপতির অনুগামীরা তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা করছেন বলেও তোপ দেগেছিলেন। শেষে ময়দানে লক্ষকণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের ভিআইপি কার্ড মোটা টাকার বদলে দেওয়া হচ্ছে বলেও ধ্রুব সাহাকে কাঠগড়ায় তোলেন অনুপম। ফলে অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য বিজেপি।
আরও পড়ুন- এক প্রণামেই দফারফা, ‘গুরু’ শিশিরের পা ছোঁয়ায় কাঁথির চেয়ারম্যানকে কী নির্দেশ তৃণমূলের?
লাগাতার এভাবে কয়েক মাস চলার পর গত সপ্তাহেই অনুপম হাজরার ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। যা তাঁর দলকে বিড়ম্বনার জের বলেই মনে করা হচ্ছিল। যদিও বোলপুরের প্কাত্ন সাংসদের দাবি ছিল, তাঁর অনুরোধেই ওই পদক্ষেপ করেছিল অমিক শাহর নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরপর সময় বেশি গড়াল না। অনুপমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল বিজেপি।
গেরুয়া দলে পদ খোয়াতেই অমুপমের পাশে দাঁড়িয়েছেন বীরভূমের জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। অনুপমকে 'ভাল ছেলে' বলে দাবি করেছেন কাজল। বলেছেন, 'অনুপম হাজরা বোলপুরের ছেলে। বীরভূমের সংস্কৃতি জানে। ও ভাল ছেলে। বিজেপির রাজনীতি ভেদাভেদ উস্কে দেয়। সত্যি কথা বলায় ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল।'
আরও পড়ুন- গঙ্গাসাগর মেলা বৈঠক: ভিআইপি’দের কী বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতার?