বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের গাড়ি দুর্ঘটনা নিয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগ করল বিজেপি। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। একই সঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও নিছক দুর্ঘটনা মানতে নারাজ।
জানা গিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে বীরভূমের ইলামবাজারে অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষীর গাড়ির সঙ্গে ডাম্পারের ধাক্কা লাগে। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় শিশু কন্যাসহ দুজনের। ঈদের বাজার সেরে ওই দেহরক্ষী দুর্গাপুর থেকে বোলপুরে বাড়ি ফিরছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। অনুব্রতর সবসময়ের সঙ্গী এই দেহরক্ষীও গরুপাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন। সূত্রের খবর, তাঁকেও গরুপাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে।
অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষীর গাড়ি দুর্ঘটনা নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। এদিন টুইটে অনুপম লিখেছেন, 'আশা করব সিবিআইয়ের সঙ্গে লুকোচুরি খেলাকালীন ওনার আর কোনও 'খুবই কাছের' দেহরক্ষীর এরকম 'দুর্ঘটনা' ঘটবে না। অতিশীঘ্রই সায়গল হোসেনের গাড়ি 'দুর্ঘটনার' সিবিআই তদন্তের দাবিতে আমার চিঠি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছাবে।' অনুপম জানিয়েছেন, 'আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত সায়গলের কাছে যা তথ্য় আছে তা সিবিআয়ের কাছে পৌঁছালে অনুব্রত মন্ডল সমস্য়ায় পরতেন। তাই এই দুর্ঘটনায় সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। যেন মনে হচ্ছে সিনেমার একটা প্লট। দুর্ঘটনায় মৃত বাচ্চাটির কথা মাথায় রেখে তদন্ত করা প্রয়োজন।'
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও কেন্দ্রীয় সম্পাদকের বক্তব্যে সহমত। তাঁর বক্তব্য, 'যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে যে ঘটনাটিকে নিছক দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর আছে পুলিশ আধিকারিকদের ফোন করতেন দেহরক্ষীর ফোন দিয়ে। সিবিআইয়ের দেখা উচিত এই দুর্ঘটনা পরিকল্পনা করে করা হয়েছে কিনা।'
গরুপাচার কাণ্ডে ইতিমধ্য়ে সিবিআই ৬ বার তলব করেছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে। পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায়ও তাঁকে সিবিআই তলব করেছে। সিবিআই তলবের দিন অনুব্রত এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বেশ কিছু দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর চিনার পার্কে নিজের ফ্লাটে যান। তাঁর আইনজীবী মারফত তখন সিবিআইকে জানিয়ে দেওয়া হয় অনুব্রতকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেছেন চিকিৎসকরা। পরবর্তীতে অনুব্রতর তরফে জানানো হয় ২১ মে-র পর তিনি শর্তসাপেক্ষে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন। তারই মধ্যে অনুব্রতর দেহরক্ষীর গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পরে। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরার দাবি, 'যতদূর জানি, ওনার 'সবথেকে বিশ্বস্ত' এবং কাছের দেহরক্ষী হলেন সায়গল হোসেন ….'যাঁর ঘাড়ে হাত রেখে' বেশিরভাগ সময় উনি হাঁটাচলা করতেন।'