কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘরে বন্ধ করে রাখার পর এবার কেন্দ্রীয় নেতার সভামঞ্চ ভাঙচুর। রাজ্য বিজেপিতে গৃহযুদ্ধ অব্যাহত। বুধবার এমনই এক গৃহযুদ্ধের সাক্ষী হল বীরভূমের খয়রাশোল। এদিন নিজের জেলা বীরভূমে অনুপম হাজরার দুটি দলীয় কর্মসূচি ছিল। উপলক্ষ্য, বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান। এর মধ্যে একটি ছিল রামপুরহাটের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে বক্তৃতা দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম। তিনি যখন রামপুরহাটে বক্তৃতা দিচ্ছেন, সেই সময় খয়রাশোলে তাঁর অস্থায়ী সভামঞ্চে ব্যাপক ভাঙচুর চালান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। একটি ট্রাক্টরের ওপর অস্থায়ী সভামঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই ভাঙচুর চালান হয়। ভেঙে ফেলা হয় সভার চেয়ারও।
এই ঘটনায় বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি গণেশ ঘোষ, বর্তমান জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মন্টু ঘোষ অভিযোগ করেন, 'বিজেপির শত্রু বিজেপিই।' এই ব্যাপারে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'এই ধরণের ঘটনা আমাদের দলে অনভিপ্রেত। আমরা আমাদের বিরোধী যে কোনও মত প্রকাশের পক্ষে। দলের মধ্যে সেটা আমরা মেনেও চলি। কেন এমন হল, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আদৌ এই ভাঙাভাঙি আমাদের লোকেদের কাজ কি না তা-ও দেখছি।'
তাঁর সভাকে ঘিরে বিজেপির গৃহযুদ্ধের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য বিজেপির সাধারণ নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ। এই ঘটনা তারই প্রকাশ। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধেও তিনি ক্ষোভ উগরে দেন। এই অভিযোগের পাশাপাশি তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কাও প্রকাশ করেন অনুপম হাজরা। তিনি বলেন, যারা আমাকে দেখে, বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদককে দেখে হায় হায় স্লোগান দিচ্ছে, তারা তৃণমূলের মাতাল। ধ্রব সাহার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ রয়েছে। তাই এই কাজ করতে পারল।'
আরও পড়ুন- সভাপতি পদে ছাত্র সংগঠনের প্রার্থী মুসলিম মহিলা, হিন্দুত্ববাদের পথ থেকে সরছে আরএসএস?
এই ঘটনায় স্বভাবতই বেশ মজা পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে রাজ্য বিজেপিকে রীতিমতো কটাক্ষ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত বিবৃতিতে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, 'বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের আরও একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এল। বীরভূমের খয়রাশোলে বিজেপির কর্মীরা তাদের সভাতেই ভাঙচুর চালিয়েছে। গেরুয়া শিবিরের এই গোষ্ঠীকোন্দল তাদের ঐক্য এবং সংকল্পের অভাবেরই জ্বলন্ত প্রমাণ।'