সেটা ৮৬ সালের কথা। দুলকি চালে মাঠ দাপিয়ে ফুটবলের রাজপুত্রের মাঠে ম্যাজিক, বাঙালির একাংশকে রাতারাতি বানিয়েছিল আর্জেন্টিনাপ্রেমী। বাঙালির ফুটবলের প্রাণভোমরা কলকাতায় সাতের দশকে ফুটবল সম্রাট পেলের দাপাদাপি বাঙালিকে ব্রাজিলভক্ত বানিয়েছিল। তাতেই বিদেশের মাটি থেকে ভাগ বসিয়েছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। সেই থেকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ হলেই বাঙালি যেন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকদের মত ভাগ হয়ে যায়। আর, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে কোনও একদলের ম্যাচ হলে, সেই দলের হয়ে গলা ফাটায়। যেন নিজের দেশের দল।
এতদিন ব্যান্যার, ফেস্টুন, জার্সি, ফেট্টিতে চলছিল সেই সমর্থনের পালা। এবার জায়গা নিল রসনাপ্রিয় বাঙালির একান্ত আপন সম্ভার মিষ্টি। আরও স্পষ্ট করলে যে মিষ্টির জন্য বাঙালির দুনিয়াভর খ্যাতি, সেই রসগোল্লা, সঙ্গে ল্যাংচায় ফুটে উঠল আর্জেন্টিনার নীল-সাদা। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে এখন ম্যাচে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনার সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চলছে। ফুটবলের রাজপুত্রের উত্তরাধিকারী মেসি এখন বাঙালির আইকন। আর, সঙ্গে অবশ্যই নীল-সাদা জার্সিটা। সেই কারণেই সাদা রসগোল্লায় ফুটে উঠল নীলের আভা। আর ল্যাংচা তার স্বাভাবিক খয়েরি বর্ণ ছেড়ে রসগোল্লার মতই হয়ে উঠল সাদা আর নীল।
আরও পড়ুন- মেসির আর্জেন্টিনা নয়, এমবাপের ফ্রান্সের জন্য তুমুল যজ্ঞ চলছে চন্দননগরে
কাতারের ফাইনালে রাজ্যের আর্জেন্টিনাপ্রেমীদের কাছে এমনই উপহার তুলে ধরল এনজেপির সান্ত্বনা সুইটস। আর এই মিষ্টি তৈরির শিল্পী বা কারিগর হলেন রাজীব ঘোষ। ভক্তিনগরের এই দোকান মালিক পেশায় মিষ্টিবিক্রেতা। নেশায় ফুটবলপ্রেমী, আর অবশ্যই আর্জেন্টিনাপ্রেমী। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, শ-পাঁচেক এমন মিষ্টি বানিয়েছেন। হঠাৎ প্রিয় দলের জন্য এমন ভাবনা কেন, তা-ও স্পষ্ট করলেন। রাজীব জানিয়েছেন, হার-জিতটা খেলায় থাকে। সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু, ফুটবলের রাজপুত্র মারাদোনার উত্তরসূরি মেসির এটাই শেষ বিশ্বকাপ। মেসির পায়ের জাদুতে মুগ্ধ গোটা বিশ্ব। সেরার সেরা সব ট্রফিই মেসির আছে। এবারের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। সেকথা মাথায় রেখে পেশা যেহেতু মিষ্টি তৈরি, তাই এভাবেই শুভেচ্ছা জানানোর কথা তাঁর মাথায় এসেছে।