Advertisment

'অগ্নিপথ'-এর প্রচারে ফোর্ট উইলিয়াম, যুবশ্রেণিকে 'অগ্নিবীর' হতে আহ্বান সেনার

'অগ্নিপথ' বেছে নিতে হলে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
army officer pc

'অগ্নিপথ'-এর প্রচার। ছবি- পার্থ পাল

মঙ্গলবারই ঘোষিত হয়েছে সেনা নিয়োগের নতুন প্রকল্প 'অগ্নিপথ'। বুধবার, সেই নতুন নিয়োগ প্রকল্পের প্রচারে পুরোদস্তুর নেমে পড়ল ভারতীয় সেনা। স্থলসেনার পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম। বুধবার সেখানেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে 'অগ্নিপথ'-এর প্রচার সারল সেনাবাহিনী। দেশের পূর্বাঞ্চলের যুবশ্রেণির কাছে এই প্রকল্পে যোগদানের আহ্বান জানালেন সেনাকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেকে রেপসওয়াল।

Advertisment

তবে, 'অগ্নিপথ'-কে স্রেফ কোনও প্রকল্প বলতে তিনি নারাজ। একজন সেনা দেশের জন্য কাজ করেন। তাঁর পথ মসৃণ নয়। রীতিমতো গোলা-বারুদে পরিপূর্ণ আগুনে জ্বলে ওঠা পথ। সেই পথ দিয়েই হাঁটতে হয় দেশের সেনাবাহিনীর জওয়ানদের।

সেকথা মাথায় রেখেই ভারতীয় সেনার এখন নতুন ট্যাগলাইন- 'সেনা মে ভর্তি কা অগ্নিপথ'। যে পথে হাঁটার সুযোগ এনে দিয়েছে সরকারের নতুন ঘোষণা। এনে দিয়েছে দেশের জন্য কাজের সুযোগ। দেশের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করার সুযোগ। নতুন প্রকল্প সম্পর্কে এমনটাই দাবি সেনাকর্তাদের।

যাঁরা 'অগ্নিপথ'-কে বেছে নেবেন, তাঁদেরকে বলা হবে 'অগ্নিবীর'। দেশের পূর্বাঞ্চলের যুবশ্রেণিকে সেই 'অগ্নিবীর' হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে সেনাবাহিনীর আহ্বান- 'সহজ সরল জীবন-যাপন করুন, অগ্নিবীর হয়ে উঠুন।' স্থলসেনার পাশাপাশি নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীতেও 'অগ্নিবীর'রা নিযুক্ত হবেন।

publive-image
ফোর্ট উইলিয়ামে সাংবাদিক বৈঠক। ছবি- পার্থ পাল

সেকথা মাথায় রেখে 'অগ্নিবীর'দের প্রতি নৌসেনার আহ্বান, 'আপনার কর্মজীবন বেছে নিন। প্রথামাফিক ৯টা-৫টার চাকরির বদলে একটি এয়ারক্রাফট কেরিয়ারে কাজ করুন। ভারতীয় নৌবাহিনীতে অগ্নিবীর হিসেবে যোগ দিন।' আর বিমান বাহিনীর আহ্বান, 'অগ্নিবীর হয়ে উঠুন। অগ্নিপথ অনুসরণ করুন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করুন।'

'অগ্নিপথ' বেছে নিতে হলে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর। প্রশিক্ষণ পর্ব-সহ সংশ্লিষ্ট সার্ভিস অ্যাক্ট অনুযায়ী চার বছরের মেয়াদে প্রার্থীর নাম নথিভুক্ত করা হবে। চালু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে কঠোর সামরিক প্রশিক্ষণ পাবেন নিযুক্তরা। পার্বত্য অঞ্চল থেকে মরুভূমি, সমুদ্র থেকে আকাশ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের সেবা করার সুযোগ পাবেন। প্রথম বছরের প্যাকেজ থাকবে ৪.৭৬ লক্ষ টাকা। চতুর্থ বছরে এই প্যাকেজ বেড়ে হবে প্রায় ৬.৯২ লক্ষ টাকা।

আরও পড়ুন- শুরুতেই চক্ষুশূল, অগ্নিপথের সমালোচনায় মুখর প্রাক্তন সেনা জওয়ানরা

প্রয়োজন সাপেক্ষে ঝুঁকি ও কঠিন পরিস্থিতি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ভাতা পাবেন অগ্নিবীর। তাঁরা প্রত্যেকে মাসিক বেতনের ৩০ শতাংশ কল্যাণ খাতে জমা করবেন। সমপরিমাণ অর্থ সরকার জমা করবে। চার বছর পর মোট তহবিলের পরিমাণ হবে প্রায় ১১.৭১ লক্ষ টাকা। যা আয়কর মুক্ত থাকবে।

মৃত্যুর ক্ষেত্রে নন-কনট্রিবিউটরি জীবনবিমার পরিমাণ হবে ৪৮ লক্ষ টাকা। কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে এককালীন অতিরিক্ত ৪৪ লক্ষ টাকা পাবেন অগ্নিবীরের পরিবার। সেবা নিধির সুবিধা-সহ চার বছরের বাকি সময়ের জন্য অবশিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা করা হবে।

কর্মরত অবস্থায় অক্ষমতার ক্ষেত্রে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। উপযুক্ত চিকিত্সা কর্তৃপক্ষ শতাংশের হারে অক্ষমতার ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের নিয়ম-নীতি স্থির করেছে। ১০০ শতাংশ, ৭৫ শতাংশ, ৫০ শতাংশ অক্ষমতার ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৪৪, ২৫ এবং ১৫ লক্ষ টাকার এককালীন অনুদান দেওয়া হবে অগ্নিবীরকে। চার বছরের মেয়াদ শেষ হলে প্রত্যেক অগ্নিবীর সেবা নিধির সুবিধা পাবেন। দক্ষতাভিত্তিক শংসাপত্র এবং উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণ সহায়তা পাবেন।

কর্মজীবনে মেধা ও পারদর্শিতার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয়স্তরে স্বচ্ছতা বজায় রেখে অগ্নিবীরের মূল্যায়ন করা হবে। ১০০ শতাংশ অগ্নিবীর স্বেচ্ছায় রেগুলার ক্যাডারে নথিভুক্ত হওয়ার আবেদন জানাতে পারবেন। যদিও সুযোগ পাবেন ২৫ শতাংশ। যাঁরা রেগুলার ক্যাডারে নথিভুক্ত হবেন, তাঁরা সৈনিকদের মত নির্দিষ্ট বেতন, বর্তমান নিয়ম-নীতি অনুযায়ী পেনশন পাবেন।

Fort William Indian army Army jawan
Advertisment